মীর কাসেমের আপিল: সারসংক্ষেপ  দিতে আরও ৪ সপ্তাহ

একাত্তরে চট্টগ্রামের আলবদর কমান্ডার মীর কাসেম আলীর যুদ্ধাপরাধ মামলার আপিলে সারসংক্ষেপ দাখিলের জন্য দুই পক্ষকে আরও চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2015, 04:03 AM
Updated : 28 May 2015, 04:03 AM

সময় চেয়ে মীর কাসেমের করা একটি আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই সময় বেঁধে দেয়।

বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন-বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

মীর কাসেমের আইনজীবীদের পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকেও ওই সময়ের মধ্যে আপিলের সার সংক্ষেপ জমা দিতে হবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শিশির মনির আদেশের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,  “ওই সময়ের মধ্যে সারসংক্ষেপ না দিলে ‘মামলা শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে’ বলে গণ্য করবে আদালত।”

এর আগেও আপিল বিভাগ সারসংক্ষেপ জমা দিতে একদফা সময় দিয়েছিল, যা শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার নতুন করে সময়ের আবেদন করে আসামিপক্ষ।

জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীকে গত বছর ২ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

ওই দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে গত ৩০ নভেম্বর আপিল করেন তিনি, যাতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তিনি খালাস চান।

মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৪টি অভিযোগের মধ্যে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদসহ আটজনকে হত্যায় সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাসেমের ফাঁসির রায় আসে ট্রাইব্যুনালে।

মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ডার হিসাবে মীর কাসেম চট্টগ্রাম অঞ্চলে সরাসরি মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত ছিলেন বলে আদালতের রায়ে উঠে আসে।

পঁচাত্তরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমান জামায়াতকে স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রসংঘ নাম বদলে ইসলামী ছাত্রশিবির নামে বাংলাদেশে রাজনীতি শুরু করলে মীর কাসেম তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন।

এরপর রাজনৈতিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে অসাধারণ ধূর্ততার স্বাক্ষর রেখে অত্যন্ত দ্রুততায় নিজের ও দলের উন্নতি ঘটান কাসেম, পরিণত হন জামায়াতের আর্থিক মেরুদণ্ডে।

মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামে যে ভবনটিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হত, সেই ডালিম হোটেলকে ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয় ‘ডেথ ফ্যাক্টরি’।

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেপ্তার করা হয় জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতাকে। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল।