‘প্রতিবাদ না হলে আমলে নেয় না প্রশাসন’

প্রতিবাদ না করলে দেশের পুলিশ প্রশাসন কিছু আমলে নেয় না বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2015, 04:30 PM
Updated : 26 May 2015, 05:01 PM

মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি।

যৌন নিপীড়ন বিরোধী নির্দলীয় ছাত্রজোট ব্যানারে ঢাকার রাস্তায় নারী ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে ছাত্র-জনতা ওই সমাবেশের আয়োজন করে।

মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির বলেছেন, “প্রতিবাদ না করলে আমাদের দেশের পুলিশ প্রশাসন কিছু আমলে নেয় না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দেশে নারীরা নিরাপদে, স্বাধীন ও মুক্তভাবে মাথা উঁচুকরে সমাজে দাঁড়াতে না পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।”

পহেলা বৈশাখে নারী নির্যাতনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখে নারী নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা কী ছিল সেটা আমরা দেখেছি। ওই ঘটনায় পুলিশ প্রথমে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছিল। এরপর যখন প্রতিবাদ হলো তখন তারা একটু একটু দায়িত্ব স্বীকার করল।

“মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের ঘটনার ক্ষেত্রেও অভিভাবকদের চাপের মুখে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছিল। পুলিশের ক্ষোভ শুধু প্রতিবাদকারীদের উপর নয় বরং নারী প্রতিবাদকারীদের উপর সেটা আরও বেশি।”

গারো নারী নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে সরকাররের উদ্দেশ্যে  করে তিনি বলেন, “এরপর থেকে কোন নারী যদি দেশের কোন এলাকায় কোন নির্যাতনের স্বীকার হন তবে পুলিশ যেন তাৎক্ষণিক ওই নারীর আইনি সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন। এরপর তারা যেন ওই নারীর সংশ্লিষ্ট থানায় সেটা অবহিত করেন।”

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, “রাষ্ট্র আসলে নিপীড়ক নয় বরং রাষ্ট্রের উপর নিপীড়করা ভর করেছে। কোন ঘটনায় পুলিশ সাধারণত নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করে।

“তাই গারো নারী নির্যাতনের ঘটনায় যেসব থানার পুলিশ ওই নারীর মামলা না নিয়ে তাকে নানাভাবে হয়রানি করেছে ওই সমস্ত পুলিশ সদস্যদের বেতন কার্তন, তাদের চাকুরিচ্যুত করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রকে নিপীড়কের ভূমিকা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”

এদিকে ঢাকার রাস্তায় নারী ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে আগামী ৩১ মে রোববার বেলা ১২টার টার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা দেন যৌন নিপীড়ন বিরোধী নির্দলীয় জোটের আহ্বায়ক শিবলী হাসান।

জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক জয়ন্ত ভৌমিকের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ ইরফান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজিয়া জান্নাত জুঁই, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি মনোয়ার হোসেন মাসুদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হাবীব, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক টনি ম্যাথিউস চিরান, বাংলাদেশ চাত্র ইউনিয়ন সাংগঠনিক সম্পাদক জিলানী শুভ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং ও  বিক্ষুব্ধ নারী সমাজের জাহানারা নূরী প্রমুখ।

এছাড়াও সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, নারী পক্ষ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পিগোষ্ঠী, গারো স্টুডেন্টস ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন।

সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় একটি মশাল মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যায় সেখান পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।