ভারতে ট্রেনে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ভারতে ভ্রমণে গিয়ে এক বাংলাদেশি গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে, যাকে দুর্বৃত্তরা ট্রেনে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে স্বজনদের ধারণা।

বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2015, 10:30 AM
Updated : 20 April 2015, 03:42 PM

তবে, বাংলাদেশ কিংবা ভারতের পুলিশের কাছ থেকে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোথায় কীভাবে মৃত্যু হয়েছে সে ব্যাপারেও তথ্য পাওয়া যায়নি।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আসলাম খান জানান, নিহত নার্গিস আক্তার (৩৪) খুলনার সোনাডাঙ্গা উপজেলার কেডিএ অ্যাপ্রোচ রোড এলাকার সাহাবুদ্দিনের মেয়ে।

গত ৯ মার্চ সঙ্গে থাকা মা ও মেয়ের কাছ থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হন।

সোমবার (২০ এপ্রিল) সকালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে নার্গিসের লাশ হস্তান্তর করা হয়।

লাশ নিতে বেনাপোল চেকপোস্টে নিহতের মেয়ে কোহিনূর কাকলি (০৯) ও অন্ধ মা মনিমালা এসেছিলেন বলে জানান ওসি আসলাম।

কোহিনূর কাকলি ও মনিমালা সাংবাদিকদের জানান, আজমির শরিফ যাওয়ার জন্য ৯ মার্চ নার্গিসসহ তারা পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে ঢোকেন। ওইদিনই হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনের টিকেট কেটে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন।

রাত সাড়ে ৩টার দিকে ৪/৫ জন যুবক দিল্লি চলে এসেছে জানিয়ে তাদের নামতে বলে। এ সময় তিনজনই নেমে গেলেও একটি ব্যাগ ভুলে রেখে আসায় সেটি আনতে আবার ট্রেনে ওঠেন নার্গিস। ওই সময় কয়েকজন যুবক ওর মুখ চেপে ধরে ট্রেনের গার্ডের রুমে নিয়ে যায়।

মনিমালা বলেন, “আমি অন্ধ মানুষ, চোখে দেখি না। কেবল মেয়ের গোঙানো ও চিৎকার শুনতে পেয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকি। ততক্ষণে ট্রেন ছেড়ে চলে যায়। পরে স্টেশন এলাকায় জিজ্ঞেস করে জানতে পারি ওটা কানপুর স্টেশন।”

“আমাদের তিনটি পাসপোর্টই নার্গিসের কাছে ছিল। কয়েকদিন ধরে ওই স্টেশনে বসে কাঁদতে থাকি আর মানুষের কাছে আমার মেয়ের খোঁজ খবর নেই।”

কিন্তু কোনো খবর তারা পাননি। পরে কে বা কারা ১৬ মার্চ তাদের দুজনকে (নানি-নাতনি) পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধ পথে বাংলাদেশে পৌঁছে দিয়ে যায় বলে মনিমালা জানান।

লাশ নিতে আসা নার্গিসের চাচি রাহেলা বেগম বলেন, গত ১৯ মার্চ খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার পুলিশ তাদের বাড়ি গিয়ে বলে যে, নার্গিস ভারতে মারা গেছে।

লাশের সঙ্গে থাকা তিনটি পাসপোর্টে ঠিকানা পেয়ে ভারতীয় পুলিশ বাংলাদেশে যোগাযোগ করেছিল বলে সোনাডাঙ্গা থানার পুলিশ তাদের জানায়, বলেন তিনি।

রাহেলা বেগম জানান, সোনাডাঙ্গা থানা থেকে মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে ওইদিনই সোনাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নার্গিসের মা মনিমালা।

ক্ষতিপূরণ ও লাশ ফেরতের জন্য মনিমালা স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়সহ দেশের নয়টি দপ্তরে আবেদনও করেন বলে রাহেলা জানান।

ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আসলাম খান বলেন, ১৯ মার্চ ঘটনাটি জানার পর খুলনা পুলিশের বিশেষ শাখা বিষয়টি বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনকে জানায়। ওই সময় নার্গিসের লাশ আগ্রার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ছিল।

পরে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে লাশটি ফেরত এসেছে বলে জানান তিনি।

নার্গিস কীভাবে মারা গেলেন, কিংবা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কি না সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি আসলাম। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে চলন্ত বাস ও ট্রেনে একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়নও তোলে।