উৎসুক ‘সাধারণের’ সমরাস্ত্র দর্শন

ফাঁকা মাঠে সেনাবাহিনীর ট্যাংক; আর সেই ট্যাংকের ওপরে মেশিনগান ভেস্ট দখল করে বসে আছে কয়েকটি শিশু!

আশিক হোসেনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2015, 01:29 PM
Updated : 24 March 2015, 01:29 PM

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে এসে মঙ্গলবার এভাবেই নেড়েচেড়ে বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র দেখার সুযোগ পেলেন দর্শনার্থীরা।

স্বাধীনতা দিবস সামনে রেখে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস সাধারণ মানুষকে জানাতে এবং ‘চ্যালেঞ্জিং’ এ পেশায় তরুণদের আকৃষ্ট করতে ৩৪টি স্টল নিয়ে সোমবার এই প্রদর্শনী শুরু হয়। ৩১ মার্চ পর্যন্ত সকাল-সন্ধ্যা এ প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত।

বেসামরিক ও সামরিক সংযোগ পরিদপ্তরের কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “দেশ ও জাতি গঠনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম, সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং বিভিন্ন সমরাস্ত্র সম্পর্কে জনসাধারণকে সম্যক ধারণা দিতে এই প্রদর্শনীর উদ্যোগ।”

প্রদর্শনীতে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া স্টলের পাশেই রয়েছে আর্টিলারি কোরের স্টল। সেখানে দেখানো হচ্ছে সার্বিয়ার তৈরি নোরা বি৫২কে১ আর্টিলারি সিস্টেম, যা দিয়ে ১৫৫ মিলিমিটার গোলা ছোড়া যায়।

এই স্টলে আরও আছে কম্ব্যাট কমব্যাট ভেহিক্যাল, অ্যামুনিশন রিসাপ্লাই ভেহিক্যাল, উইপন লোকেটিং রাডার ও মাল্টি লঞ্চ রকেট সিস্টেম ইত্যাদি।

দর্শকদের দেখা গেল বিপুল আগ্রহ নিয়ে এসব সমরাস্ত্র নাড়াচাড়া করে দেখছেন। এসব যুদ্ধ সরঞ্জাম কীভাবে কাজ করে তাও বুঝিয়ে দিচ্ছেন দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা।

‘মুক্তিযুদ্ধ’ স্টলে রাখা হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র। সম্মুখ সমরে কীভাবে শক্রপক্ষের যোদ্ধাদের পরাস্ত করা হয় তা দেখানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম যুদ্ধক্ষেত্র ও বাংকার।

ফ্লাই-প্লাস্ট, প্যারা ড্রপিং, র‌্যাপলিং ডাইভিং, অ্যাসল্ট কোর্স, আন আর্মড কমব্যাটসহ বিভিন্ন বিষয়ে দর্শনার্থীদের ধারণা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এই প্রদর্শনীতে। এছাড়া রয়েছে বাংলাদেশ অর্ডিনেন্স ফ্যাক্টরির তৈরি করা অস্ত্র ও গোলা-বারুদের প্রদর্শনী।

প্রদর্শনীর অন্য আকর্ষণীয় বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে নৌ ও সেনাবাহিনীর জলযানে লেকক্রুজ এবং সেনাবাহিনীর এপিসি রাইড।

নৌ বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজের রেপ্লিকা ও বিমান বাহিনীর বিভিন্ন যুদ্ধ সরঞ্জামও চোখে পড়বে প্রদর্শনীতে। দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন নৌ বাহিনীর সোয়ার্ডস (স্পেশাল ওয়ারফেয়ার এন্ড ডাইভিং স্যালভেজ) কমান্ডের মহড়াও দেখতে পাবেন।

নৌ বাহিনীর কমান্ডার আশরাফ সাংবাদিকদের বলেন, “ডাইভিং ও কমান্ডো অপারেশন অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ। এ কাজের জন্য বিশেষ শারীরিক সক্ষমতার প্রয়োজন হয়।”

বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার রহমতুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, এ প্রদর্শনী ঘুরে তাদের সমরাস্ত্রের মধ্যে রকেড পড, লঞ্চার ও স্মোক পডস, মিজাইল লঞ্চার, এন্টি এয়ারক্রাফট গানসসহ বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জাম সম্পর্কে দর্শনার্থীরা ধারণা নিতে পারবেন।