রোগীদের কষ্ট দেবেন না: রাষ্ট্রপতি

অর্থের অভাবে যাতে দরিদ্ররা চিকিৎসাবঞ্চিত না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2015, 02:18 PM
Updated : 1 March 2015, 02:18 PM

একই সঙ্গে চিকিৎসকদের আচরণে যাতে রোগীরা মনে কষ্ট না পান সেদিকে লক্ষ্য রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) দ্বিতীয় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি এই আহ্বান জানান।

চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা প্রদানে আমাদের অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। অর্থের অভাবে তারা যাতে চিকিৎসাবঞ্চিত না হন বা অবহেলার শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

“রোগীরা হাসপাতালের অতিথি। ফলে আপনাদের কোনো আচরণে তারা যেন মনে কষ্ট না পান, সে দিকে বিশেষ নজর দিবেন।”

বাংলাদেশে জনসংখ্যার অনুপাতে চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা কম হওয়াকে চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বিপুল জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এই দুই পেশাজীবী বাড়ানোর ওপরও জোর দেন আবদুল হামিদ।

সমাজের প্রতি চিকিৎসকদের দায়বদ্ধতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “আপনাদের এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে সমাজ ও রাষ্ট্রের রয়েছে অপরিসীম অবদান। তাই সমাজের কাছে আপনাদের দায়বদ্ধতা সাধারণ জনগণের চেয়ে বেশি।

“আমার বিশ্বাস আপনারা আপনাদের মেধা, মনন, চিকিৎসা ও মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে দেশের জনগণের আরও সেবা দিবেন, তাদের ভালবাসা ও দোয়ায় সিক্ত হবেন।”

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, “আমি চাই আপনারা বড় মন নিয়ে সাধারণের মাঝে বড় ডাক্তারের পাশাপাশি বড় মানুষ হিসেবেও বিবেচিত হন।”

নানা পেশার মধ্যে চিকিৎসাকে সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহৎ আখ্যায়িত করে চিকিৎসকদের সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নত দেশগুলোতে কী ধরনের গবেষণা হচ্ছে তা আমাদের চিকিৎসকদের জানতে হবে এবং তাতে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

“ক্যান্সার, হৃদরোগ, এইডসহ অন্যান্য প্রাণঘাতি রোগের বিরুদ্ধে কিভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায় সে বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। কারণ এসব রোগের চিকিৎসা যেমন ব্যয়বহুল তেমনি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাও দীর্ঘমেয়াদি।”

বিএসএমএমইউ আচার্য আবদুল হামিদ স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন পদ্ধতি অনুসরণে দেশবাসীকে সচেতন করে তুলতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সাতজন চিকিৎসককে সম্মানসূচক পিএইচডি ডিগ্রি ‘অনারিস কজা’ দেওয়া হয়। তারা হলেন- অধ্যাপক আবুল কাশেম, অধ্যাপক এম এন আলম, অধ্যাপক টি এ চৌধুরী, জাতীয় অধ্যাপক আব্দুল মালিক, অধ্যাপক মো. নুরুল আমিন, অধ্যাপক রশিদউদ্দিন আহম্মেদ ও অধ্যাপক রবিউল হোসাইন।

সমাবর্তনে কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্যের জন্য তিনজন চিকিৎসককে স্বর্ণ পদক দেওয়া হয়।

বিএসএমএমইউ ক্যাম্পাসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ভারতের লক্ষ্ণৌ এর কিং জর্জ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য় রবি কান্ত।

আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিএসএমএমইউ উপাচার্য প্রাণ গোপাল দত্ত।