এলডিসিকে প্রতিশ্রুত সহায়তা দিতে জাতিসংঘের আহ্বান

বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়নে প্রতিশ্রুত সহায়তা (ওডিএ) দিতে উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ।

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2015, 06:42 AM
Updated : 29 Jan 2015, 06:42 AM

গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে এলডিসি বিষয়ক ‘চতুর্থ জাতিসংঘ সম্মেলনের’অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।

চার বছর আগে ইস্তাম্বুলে হওয়া এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) বিষয়ক ‘চতুর্থ জাতিসংঘ সম্মেলনে’ স্বল্পোন্নত দেশের জন্য প্রতিবছর যে সহায়তা বরাদ্দ হয় সেখান থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ এসেছে মাত্র এক শতাংশ।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে এ মোমেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশের প্রতি বছর মাথাপিছু ১১২ ডলার হিসেবে মোট ১৫ বিলিয়ন ডলার করে পাওয়ার কথা। সে হিসেবে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মোট ৭৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার কথা থাকলেও এসেছে  তার ১ শতাংশ অর্থ সহায়তা।

প্রাপ্তি কম থাকলেও বাংলাদেশ এমডিজির (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অধিকাংশই অর্জনে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে মোমেন বলেন, “বাংলাদেশ সুশাসনের ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি সাধনে সক্ষম হয়েছে বলেই সীমিত সম্পদ নিয়েই বাংলাদেশ দ্রুত এলডিসি থেকে উত্তরণে ব্যাপক উন্নয়ন করে যাচ্ছে।”

মোমেন জানান, এলডিসি থেকে উপরের স্তরে ওঠার লক্ষ্যে মাথাপিছু, মানবসম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক- এই তিনটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

“২০০৮ সালে যেখানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৬৩০ মার্কিন ডলার ছিল সেখানে গত বছর আয় ১ হাজার ২০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা এলডিসি উত্তরণ-সীমা ১ হাজার ২৪২ ডলারের কাছাকাছি। এছাড়া দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ থেকে গত বছর ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে।”

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষার ক্ষেত্রে লিঙ্গ-সমতা, শিশু মৃত্যুর হার কমানোসহ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। প্রায় শতভাগ মানুষ নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটারি সুবিধার আওতায় এসেছে।

এলডিসিভুক্ত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ঝুঁকিতে আছে বলেও সাধারণ পরিষদের ওই সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

২০১১ সালের ৯ থেকে ১৩ মে ইস্তাম্বুলে এলডিসি বিষয়ক ‘চতুর্থ জাতিসংঘ সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়।

ওই সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০১১ থেকে ২০২০ সালের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে, যার মূল লক্ষ্য ধরা হয়- দারিদ্র্য দূরীকরণ, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জন এবং ২০২০ সালের মধ্যে এলডিসিভুক্ত ৪৮টি দেশের অর্ধেক তার উচ্চতর স্তরে উন্নয়নের লক্ষ্যে কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ পেরনো।

ইস্তাম্বুল সম্মেলনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে উন্নত দেশগুলোকে তাদের মোট জাতীয় আয়ের শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ‘উন্নয়ন সহায়তা’ হিসেবে দেওয়া কথা। আর স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে মোট জাতীয় আয়ের শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ থেকে দশমিক ২ শতাংশ ‘অর্থ সহায়তা’দেয়ার কথা।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রসহ অধিকাংশ উন্নত দেশই তাদের প্রতিশ্রুতির ধারেকাছেও নেই বলে ওই সভায় জানানো হয়।