‘পদ্মা সেতুর সব সংযোগ সড়ক চার লেন হবে’

ঢাকা-বরিশালসহ নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর সব সংযোগ সড়ক চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2015, 03:11 PM
Updated : 25 Jan 2015, 03:11 PM

রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

মমতাজ বেগমের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী জানান, পদ্মাসেতুর বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে জাজিরা অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজ অগ্রগতি ৩০ শতাংশ, মাওয়া অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজ ২২ শতাংশ এবং সার্ভিস এলাকা-২ এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে ১৫ শতাংশ।

তিনি জানান, এছাড়া মূল সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা, স্টিল ফেব্রিকেশন ও খননের কাজ চলছে। নদী শাসনের জন্য জরিপের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

তাহজীব আলম সিদ্দিকীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার কাজ আগামী জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছি। এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের ৬৪ দশমকি ৫৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চার লেনে উন্নীত করার কাজ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। এই সড়কটিকে ছয় লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। 

নুরজাহান বেগমের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে পরিচালিত সমীক্ষা অনুযায়ী ঢাকার মহাখালী ফ্লাইওভার থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ১৪০ মিটার আন্ডারপাস ও ৪৪০ মিটার সার্ভিস রোড এবং ৫৮০ মিটার র‌্যাম্পসহ মোট ৪৯০ মিটার ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রাথমিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে হেমায়েতপুর, কদমতলী মোড়, নিমতলী, সিরাজদীখান ও মদনগঞ্জ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

রেলে লোকসান বছরে নয়শ কোটি

এদিকে দিদারুল আলমের (চট্টগ্রাম-৪) লিখিত প্রশ্নের জবাবে রেল মন্ত্রী মুজিবুল হক জানান, ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে রেলের লোকসান হয়েছে ৮৭৯ কোটি ৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে রেলের ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৬৮৪ কোটি ৮৫ লাখ ৪৯ হাজার টাকা এবং আয় হয়েছে ৮০৫ কোটি ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

এসময় রেলওয়ে ৬ কোটি ২৫ লাখ ৯৭ হাজার যাত্রী পরিবহন করে বলেও জানান মন্ত্রী।

মন্ত্রী জানান, জ্বালানি তেলের মূল্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, এবং প্রশাসনিক ব্যয় বেড়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে সরকার পরিবহনের মতো ট্রেনের ভাড়া আনুপাতিক হারে বাড়ে না। ফলে ট্র্রেনের আয় তুলনামূলক কম হয়। সরকার মূলত পাবলিক সার্ভিস অবলিগিশন বিবেচনায় ট্রেন পরিচালনা করে থাকে। এতে লাভ লোকসানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়।

এম আব্দুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) লিখিত প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে সরাদেশে রেলওয়ের ৩৩৯টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনে মোট ১ লাখ ৬৭ হাজার আসন আছে বলে সে পরিমান যাত্রী ধারণ করতে সক্ষম।

স্বতন্ত্র সদস্য হাজী সেলিমের (ঢাকা-৭) প্রশ্নের উত্তরে মুজিবুল হক জানান, রেলের আন্তঃনগর ট্রেনে ভ্রমণের জন্য আসন সংরক্ষণ টিকিট ইস্যু হয়। সে অনুযায়ী বিভিন্ন স্টেশনে টিকিট বরাদ্দ করা হয়। ট্রেনের অনিয়ম না হওয়ার জন্য আন্তঃনগর ট্রেনে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম কম্পিউটারাইজড করা হয়েছে।

তিনি জানান, যাত্রীদের সুবিধার্থে ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২৫ ভাগ টিকিট বিক্রি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।

টিকিটের কালোবাজারি প্রতিরোধে বিভিন্ন স্টেশন প্লাটফর্ম ও আশেপাশে এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে।

‘সরকারি পাটকল বন্ধ নেই’

দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক জানান, সরকারের মালিকানাধীন কোনো পাটকল বর্তমানে বন্ধ নেই। তবে বেসরকারি মালিকানাধীন ২৫টি পাটকল বন্ধ আছে। এসব কারখানার শ্রমিকের সংখ্যা ১১ হাজার ৩৪২ জন।

আমিনা আহমদের প্রশ্নের জবাবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ জানান, দেশে গত পাঁচ বছরে নারী নির্যাতন সম্পর্কিত মামলার সংখ্যা দুই লাখ ৫৮ হাজার ৫২টি। এরমধ্যে নারী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৭৪টি।