দল না দেখে অপরাধী ধরার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

যেভাবেই হোক, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে তৃণমূলের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2014, 09:01 AM
Updated : 30 March 2020, 08:13 AM

অপরাধী যে দলেরই হোক- তাদের কঠোর হাতে দমন করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে রংপুর ও বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার এবং বরগুনা ও লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সরকারপ্রধান এই নির্দেশনা দেন।

গত মাসে রংপুরে এক আওয়ামী লীগ নেতা খুন হওয়ার ঘটনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেভাবেই হোক উন্নয়ন করতে হবে। যারাই সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও মাদক চোরাচালানে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষ স্বস্তিতে জীবন যাপন করবে, এটাই আমরা চাই।”

রংপুরের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ইমরান হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার ওই ঘটনায় মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল আলমকেও আসামি করা হয়।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “অপরাধী কে, কোন দলের, তা জানতে চাই না। অপরাধ করলে ধরতে হবে। যে অপরাধী তাকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। কারও মুখ চেয়ে না।”

স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। 

তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “যে অপরাধী সে কোন দলের, তা না দেখে তাকে ধরতে হবে। জানিয়ে দেবেন এটা আমার নির্দেশ।”

সেইসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, “কিছু লোক থাকে- যারা পার্মানেন্ট গভর্নমেন্ট পার্টি। তারাই সব ঝামেলার সৃষ্টি করে।”

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কোনোভাবেই সহ্য করবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করার কথাও বলেন তিনি।

সরকারের নেওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেন তিনি। তা ত্বরান্বিত করতে ব্যবস্থা নিতেও কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন তিনি। জনপ্রতিনিধিদেরও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পরিদর্শনের পরমর্শ দেন তিনি।

সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে বসে এই ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

বরগুনায় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেওয়া কোস্ট গার্ডের ওই অঞ্চলের কমান্ডার বলেন, সীমিত সামর্থ্য দিয়ে জলদস্যু নির্মূলে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।

বরগুনার সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীকে জলদস্যুদের বিরুদ্ধে তাদের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, “আমরা জলদস্যুদের উৎপাতে অতিষ্ঠ। সীমিত সম্পদ ও অস্ত্রে তাদের মোকাবেলা করা সম্ভব না। এখানে নৌবাহিনীর টহলের ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে জেলে সম্প্রদায় টিকে থাকবে না।”

“আমি যা যা করার করব,”, সব শুনে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে সেনানিবাস, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, এবং জাহাজ রি-সাইক্লিং শিল্প গড়ে তোলার আশ্বাস দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা এবং কুড়িগ্রামের দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার প্রতি নজর দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।  

মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যাগুলো জানতে এবং তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দিতে গত নভেম্বর থেকে মাসে দুই বার এভাবে ভিডিও কনফারেন্স করছেন প্রধানমন্ত্রী।

২৪ নভেম্বর মৌলভীবাজার জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের পর তিনি বলেন, “আজ শুরু করলাম, এরপর অন্যান্য বিষয় নিয়ে সবাই সব সময় তৈরি থাকবেন। আপনারা কে কী কাজ করছেন, সমস্ত ডাটা নিয়ে রেডি থাকবেন। যে কোনো সময় বসব, কথা বলব এবং জিজ্ঞেস করব- যার যার স্ব স্ব এলাকায় কী কী কাজ হচ্ছে।”