শফিউল হত্যা: আটজন ফের রিমান্ডে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম হত্যা মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ১১ জনের মধ্যে আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2014, 08:41 AM
Updated : 24 Nov 2014, 11:09 AM

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিহার থানার ওসি আলমগীর হোসেন ১১ আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছিলেন। সোমবার তার আবেদনের শুনানি করে রাজশাহীর মহানগর হাকিম শারমিন আক্তার আটজনকে এক দিন করে হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি দেন।

গত ১৫ নভেম্বর ক্যাম্পাস সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন লালনভক্ত শফিউল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এন্তাজুল হক পরদিন মতিহার থাকায় একটি হত্যা মামলা করেন, যাতে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটকদের মধ্যে থেকে ১১ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর গত শুক্রবার এই ১১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

সোমবার আদেশের পর ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, “৮ জনকে আদালত থেকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

হত্যাকাণ্ডের পর নিহত অধ্যাপকের ছেলে জঙ্গিদের দায়ী করেন। পুলিশের তদন্তও এ পর্যন্ত সেদিকেই নির্দেশ করছে।

তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ‘জামায়াত নিয়ন্ত্রিত’ জঙ্গিদের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছেন। 

ওই ঘটনায় রোববার বগুড়া থেকে আরো ছয়জনকে আটক করেছে রাজশাহীর পুলিশ, যাদের মধ্যে চারজন কামারও আছেন। পুলিশ বলছে, শফিউল হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতিগুলো তারাই তৈরি করেছেন।

এছাড়া আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ নামে ফেইসবুকে পাতা খুলে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করার ঘটনায় বগুড়ার একটি ক্যাডেট মাদ্রাসার এক শিক্ষক এবং অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকেও আটক করেছে পুলিশ।

তবে শনিবার রাতে ঢাকা ও রাজশাহীর বিভিন্ন স্থান থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যা ব বলেছে, শফিউল হত্যায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য তারা পায়নি ।

রাজশাহীর এক যুবদল নেতা এবং সাবেক নেতাসহ গ্রেপ্তার ছয়জনের পাশাপাশি হত্যায় আরো দুজন জড়িত জানিয়ে র্যা ব দাবি করে, ব্যক্তিগত 'অপমানের' প্রতিশোধ নিতেই অধ্যাপক শফিউলকে খুন করা হয়।

গণস্বাক্ষর কর্মসূচি

অধ্যাপক শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আয়োজনে বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চলে। আরো দুই দিন এ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তারা।

এদিকে শফিউল ইসলাম হত্যার ‘প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে’ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে ছাত্রদল।

মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল যৌথভাবে মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এছাড়া মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুর রহমান রিটনও বক্তব্য দেন।

তারা এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে র্যা ব ও পুলিশের দুই ধরনের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং শফিউল হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবিতে ২৮ নভেম্বর নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।