জঙ্গি সন্দেহে পাকিস্তানিসহ পাঁচজন আটক

চট্টগ্রামে জঙ্গি সন্দেহে এক পাকিস্তানি নাগরিকসহ পাঁচজনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2014, 07:52 AM
Updated : 23 Nov 2014, 11:46 AM

রোববার বেলা ১২টার দিকে নগরীর নাসিরাবাদ এলাকার হোটেল লর্ডস ইন থেকে তাদের আটক করা হয়।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) বনজ কুমার মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”

এরা হলেন- মোহাম্মদ আলম, আবদুল মজিদ, মোহাম্মদ আমিন, মোহাম্মদ ছালামত উল্লাহ ও শফিউল্লাহ।

এই পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি কমিটি করেছে নগর পুলিশ। উপ-কমিশনার কুসুম দেওয়ানের তত্ত্বাবধানে গঠিত কমিটিতে তিনি ছাড়াও নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) মো. শহিদুল্লাহ, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) শাহ আব্দুর রউফ, সহকারী কমিশনার (আইসিটি) মো. জাহাঙ্গীর, পুলিশ পরিদর্শক মো. রফিক, সদীপ কুমার দাশ ও আজিজ আহমদকে রাখা হয়েছে।  

গঠিত কমিটি জিজ্ঞাসাবাদের পর আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেওয়া হবে বলে জানান অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।

উপ-কমিশনার কুসুম দেওয়ান জানান, আটক পাঁচজনের মধ্যে আলম পাকিস্তানি নাগরিক। তিনি ‘গ্লোবাল রোহিঙ্গা সেন্টার’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পরিচালক, যার সদর দপ্তর নেদারল্যান্ডসে।

তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে বলে কুসুম দেওয়ান জানান।

আলমের পাসপোর্ট থেকে জানা যায়, গত শুক্রবার তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে জেদ্দা থেকে বাংলাদেশে আসেন। এর আগে গত ২০ মার্চ তিনি বাংলাদেশে আসেন এবং ২৪ মার্চ বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। দুইবারেই তিনি জেদ্দা থেকে বাংলাদেশের ভিসা গ্রহণ করেছেন। 

এছাড়া গত একবছরে তিনি সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, বাহরাইন, সুদান ভ্রমন করেন।

পাসপোর্ট অনুযায়ী আলমের জন্ম তারিখ ১৯৭০ সালের ৬ জুন। তার জন্মস্থান করাচি এবং বাবা মোহাম্মদ ইয়াছিন। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর তার পাসপোর্ট ইস্যু হয়।

এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী আব্দুল মজিদ জানান, কক্সবাজারের উখিয়া পালংখালির বাসিন্দা হলেও তার মা-বাবা রোহিঙ্গা। তার বাবার নাম আব্দুল আহাদ।  

তার কাছ থেকে উদ্ধার করা পাসপোর্টে তার জন্মস্থান সৌদি আরবের মক্কা ও জন্ম তারিখ ১৯৮৩ সালের ৩ অক্টোবর লেখা আছে।

গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে ইস্যু হয় মজিদের পাসপোর্ট। এক বছরে তিনি থাইল্যান্ড, ভারত, কাতার, বাহরাইন ও তুর্কি ভ্রমণ করেছেন।

জাতিগত ও রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে প্রায় দুই দশক আগে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢোকা শুরু করে। কক্সবাজারের দুটি ক্যাম্পে ৩৪ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গার বাইরে আরো প্রায় দুই থেকে তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়।

বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গারা বিদেশে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দেশি-বিদেশি কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের নামে জঙ্গি কার্যক্রমে ইন্ধন দিচ্ছে বলেও গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনায় হায়দ্রাবাদ থেকে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের সদস্য খালিদ ওরফে খালিদ মোহাম্মদ নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেন ভারতীয় গোয়েন্দারা।

তারা বলছেন, মিয়ানমারের উগ্রপন্থি সংগঠন তেহেরিক-ই-আজাদি আরাকান এর হয়ে পাকিস্তানের তেহেরিকেই তালিবানের কাছ থেকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন খালিদ।