ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম স্থগিতের দাবি

যুদ্ধাপরাধে মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ে আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন হয়েছে দাবি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর লবিস্ট টবি ক্যাডম্যান।

সৈয়দ নাহাস পাশা লন্ডন থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2014, 07:18 PM
Updated : 31 Oct 2014, 07:18 PM

একই সঙ্গে  ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সব রায় স্থগিতেরও দাবি তুলেছেন তিনি।

এ বিষয়ে পদক্ষেপ চেয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের দপ্তর এবং বিশেষ দূতদের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতের বিদেশি আইনজীবী ক্যাডম্যান।

শুক্রবার লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন তিনি।ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা এবং ‘সেইভ বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের সমন্বয়ক নজরুল ইসলামও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

একাত্তরে হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উসকানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার আটটি ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামীকে দোষী সাব্যস্ত করে এর চারটির জন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অন্য চারটিতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আল-বদর বাহিনীর প্রধান নিজামীর বিরুদ্ধে বুধবার এই রায় ঘোষণার পর সারা দেশে তিন দিনের হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী, যার প্রথম দিন গেছে বৃহস্পতিবার। আগামী রবি ও সোমবারও তাদের হরতালের ঘোষণা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ক্যাডম্যান বলেন, “একটি বিশ্বস্ত সূত্রে গোপন যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে, যাতে বিচার বিভাগ, প্রসিকিউশন ও সরকারের সদস্যদের সঙ্গে যোগসাজশের প্রমাণ মিলেছে।

“সরকারের লোকজনকে প্রত্যক্ষভাবে বিচার প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব খাটাতে দেখা গেছে এবং বিচারে প্রভাব খাটিয়ে রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর প্রতিহিংসা চরিতার্থের অভিযোগ রয়েছে।”

বিচার প্রক্রিয়ায় ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা আন্তর্জাতিক আইনের মূলনীতি মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দাবি করেন টবি ক্যাডম্যান।

ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের সাক্ষীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

জামায়াতের এই বিদেশি আইনজীবী বলেন “কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই একটি আধা সামরিক বাহিনী (আল-বদর) গঠনের জন্য নিজামীকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা।”

নিজের দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, আল-বদর বাহিনী গঠনের চার মাস আগেই ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতির পদ ছেড়েছিলেন নিজামী।

সাক্ষীদের ওপর সরকারের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “সরকারের সদস্যদের অনুরোধে একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে অখণ্ডনযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করেছিলেন আসামিপক্ষ।”

ট্রাইব্যুনালে আইনের লংঘন হচ্ছে দাবি করে তা ঠেকাতে সোচ্চার হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান ক্যাডম্যান।

বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অবিলম্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ট্রাইব্যুনাল-২ এর সব বিচার কার্যক্রম স্থগিত, এ পর্যন্ত দেওয়া সব দণ্ড স্থগিত এবং অন্যান্য দেশে এ ধরনের ট্রাইব্যুনালে কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায় নিয়েও প্রশ্ন তুলে তা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন জানানোর সুযোগ দাবি করেছিলেন জামায়াতের আন্তর্জাতিক লবিস্ট ক্যাডম্যান।

এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

গত বছরের রাজনৈতিক সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ছিল তার আবেদন।

</div> </p><p> <div class="embed"> <iframe height="315" src="https://www.youtube.com/embed/E-WAnbcXog4" width="640"/> </div> </p><p> <div class="embed"> <iframe height="315" src="https://www.youtube.com/embed/S9HNNjrol8U" width="640"/> </div>  </p>