ইউএনএইচআরসি’র সদস্যপদ জিতল বাংলাদেশ

মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের প্রধান সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2014, 04:22 PM
Updated : 22 Oct 2014, 12:52 PM

মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে ৪৭ সদস্যের এই কাউন্সিলের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই জয়ের ফলে ২০১৫-২০১৭ সাল মেয়াদে ইউএনএইচআরসির সদস্য হচ্ছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই বিজয়ে আবার প্রমাণিত হলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে।

“স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) চেয়ারপারসন এবং সাবের হোসেন চৌধুরী ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই বিজয় আরও বেশি আনন্দের।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী

মানবাধিকার নিয়ে কাজ করায় জাতিসংঘের এই পরিষদের সদস্য পদ লাভে ‘ব্যাপক’ প্রচারণা চালিয়েছিল বাংলাদেশ। মানবাধিকার নিয়ে প্রায়ই পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বাংলাদেশকে।  

হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের এশিয়া গ্রুপের সদস্য পদ পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বাংলাদেশ। এই গ্রুপে চারটি আসনের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কাতার ও থাইল্যান্ড ভোটে লড়ে।

সবচেয়ে বেশি ভোট পায় ভারত, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইন্দোনেশিয়া; আর বাংলাদেশ তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৪৯ ভোট পেয়ে সদস্যপদ নিশ্চিত করে। ভোটে বাদ পড়েছে থাইল্যান্ড।

এই ভোটের প্রচারে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এবং গত বছর সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশ সমালোচনার মুখে পড়ায় এই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন তারা।

“পররাষ্ট্রমন্ত্রী এটাকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিলেন। শুধু এই নির্বাচনে সমর্থন চেয়ে প্রত্যেক রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি,” বলেন এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম

“এমনকি নির্বাচনের সময় প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে নিউ ইয়র্কে পাঠিয়েছেন তিনি।”

এ বিজয় বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থনের প্রকাশ- মন্তব্য করে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে এ মোমেন বলেন, “আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্যে এ এক বিরল ঘটনা।”

তিনি বলেন, “হংকংভিত্তিক কয়েকটি সংস্থা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অপপ্রচার চালিয়েছিল যেন কেউ ভোট না দেয়। তারা মোটা অর্থ বিলিয়েছে এ প্রচারে। কিন্তু সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নেতৃত্বের প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েই এ মাসে সবকটি নির্বাচনে বাংলাদেশকে জয়ী করেছে।”

গত ৯ অক্টোবর ক্যামেরুনের রাজধানী ইয়াউনদে-তে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) ৬০তম সম্মেলনে সরাসরি ভোটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন শিরীন শারমিন।

এরপর সপ্তাহ না ঘুরতেই সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় বিশ্বের ১৬৪টি দেশের আইনসভার সংগঠন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩১তম সাধারণ অধিবেশনে ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সাবের হোসেন।