শুক্রবার ইতালির মিলানে দশম আসেম শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন বিশ্ব নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কখনও উন্নয়নশীল বিশ্বের মাথাপিছু গড় মাত্রার বেশি কার্বন নিঃসরণ করবে না।
এ বিষয়ে উন্নত বিশ্বের উদ্যোগের ঘাটতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই বিশাল বোঝার (কার্বন নিঃসরণের) ভার বহনে ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।”
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় উন্নত বিশ্বের প্রতিশ্রুতি এবং তা বাস্তবায়নে নেওয়া পদক্ষেপের মধ্যে বিশাল ব্যবধানের বিষয়টি তুলে ধরেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
২০১২ ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত রিও+২০ শীর্ষক জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত দেশগুলোর দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চেয়ে তিনি বলেন, “সবার জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরির একটি স্বপ্ন ভাগাভাগি করতে তখন দেশগুলো একমত হয়েছিল।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু ঝুঁকির মধ্যে থাকা নিম্ন আয়ের দেশ হয়েও বাংলাদেশ উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় এবং পরিবর্তিত পারিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর কাজে ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। তারপরও এদেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বার বার বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, স্থলভাগে লবণাক্ত পানির আগ্রাসন ও নানা ধরনের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের উপকূলীয় জনপদের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ‘অভিঘাত’ মোকাবেলায় বিশ্ব সম্প্রদায় এখনই এগিয়ে না এলে সামনের দিনগুলোতে অনেক বেশি মাশুল গুণতে হবে বলেও সতর্ক করেন শেখ হাসিনা।
“পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে কীভাবে খাপ খাওয়াতে হয়- সে বিষয়ে বাংলাদেশ অনেক কিছু শিখেছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে সেই অভিজ্ঞতা বিনিময় করতেও বাংলাদেশ প্রস্তুত।”
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর অভিযোজন, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও স্থানান্তর, সক্ষমতা তৈরি, কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও সহায়তার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আরো অর্থায়ন প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বিষয়গুলো সবুজ জলবায়ু তহবিলে অন্তর্ভুক্ত করার ওপরও তিনি জোর দেন।
সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের চিত্রও তিনি তুলে ধরেন।