কোটালীপাড়া উপজেলার নলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মন্টু লাল হাজরাকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ ও শিক্ষা কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেছেন।
মন্টু লাল হাজরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর নলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ সদস্যের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সভাপতি নির্বাচিত করার কথা ছিল। এর মধ্যে ৪ সদস্যের শিক্ষক প্রতিনিধিও নির্বাচিত করা হয়।
সেখানে একজন জুনিয়র মহিলাকে নির্বাচিত করায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী শহিদুল ইসলাম ক্ষেপে যান।
“রোববার ১৪ সেপ্টেম্বর বিকালে তিনি আমাকে তার অফিসে ডেকে পাঠান। সেখানে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন ও চাকরি থেকে বরখাস্তের হুমকি দেন। আমি তার পা ধরে ক্ষমা চাই। তারপরও তিনি আমাকে ধমক দিয়ে অফিসের দ্বিতীয় তলা থেকে ফেলে দেয়ার হুমকি দেন।
“এক পর্যায়ে আমি অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।”
কোটালীপাড়ার কলাবাড়ি ইউনিয়নের মেম্বার ও ওই স্কুল-ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সমর হালদার অভিযোগ করেন, “সভাপতি পদে শিক্ষা কর্মকর্তার পছন্দের প্রার্থী ছিলেন মৃণাল কান্তি বালা। তাকে সভাপতি করতে শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী শহিদুল ইসলাম প্রধান শিক্ষককে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন।”
১৫ সেপ্টেম্বর ছিল সভাপতি নির্বাচনের শেষ দিন। এর আগে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে জুনিয়র মহিলা শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে তার পছন্দের প্রার্থীর ক্ষতি হতে পারে আশংকায় ১৪ সেপ্টেম্বর বিকালে প্রধান শিক্ষককে অফিসে ডেকে চরম অপমান করে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ওই স্কুলের সভাপতি নির্বাচনে তার পছন্দের কোনো প্রার্থী নেই। এ নির্বাচন প্রধান শিক্ষক তার ক্লাস্টারের শিক্ষা অফিসারের নেতৃত্বে সম্পন্ন করবেন।
“১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে আমার কাছে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তা করেননি। ১৪ সেপ্টেম্বর আমার অফিসে আসলে আমি তাকে এ ব্যাপরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি নার্ভাস হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি তার সাথে কোনো অসৌজন্যমূলক আচরণ করিনি।”
স্কুলের শিক্ষার্থী রিংকু, প্রতিভা ও স্বাপ্না বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, “অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে আমরা এলাকার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করব।”