চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিমুক্ত: পাউবো

মেঘনার স্রোতে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের কিছু অংশ দেবে গেলেও এতে আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2014, 02:04 PM
Updated : 1 Sept 2014, 02:04 PM

সোমবার বিকালে ঢাকা থেকে পাউবোর উচ্চ পর্যায়ের একদল কর্মকর্তা শহর রক্ষা বাঁধের বড় স্টেশন মোলহেড এলাকা পরিদর্শন করেন।

একদিন আগে রোববার পাউবোর স্থানীয় কর্মকর্তারা এ বাঁধের ৮০ মিটার এলাকাকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে বালুবর্তি ব্যাগ নিক্ষেপ শুরু করে।

প্রতিনিধি দলে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এখানে আতংকিত হওয়ার মতো কিছু নেই। যেসব স্থানে ব্লক সরে গেছে সেসব জায়গায় বালুভর্তি ব্যাগ ও ব্লক ফেলা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “শহর রক্ষা বাঁধের বড় স্টেশন মোলহেড এলাকার ৮০ ফুট এলাকার বিভিন্ন স্থানে ব্লক সরে গিয়ে দেবে গেছে। আমরা ম্যাপ বিশ্লেষণ করে দেখেছি, মোলহেড এলাকার তলদেশে মাটির স্তর স্বাভাবিক রয়েছে। শুধু কয়েকটি স্থানে লিকেজ হয়ে পানি প্রবেশ করে ব্লক দেবে গেছে।”

তিনি জানান, পদ্মা-যমুনাসহ উজানের সকল নদ-নদীর পানি চাঁদপুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর এই মোহনা হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। সে কারণে এখানে পানির গতিবেগ দেশের অন্যান্য নদীর তুলনায় বেশি।

“তাই আমাদের স্থানীয় পর্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল কর্মকর্তার তীক্ষ্ণ নজর থাকে এই এলাকার প্রতি। কোনো ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হয়।”

প্রতিনিধি দলে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিজাইন, সার্কেল-৪) ড. জীবন কুমার সরকার বলেন, হাইড্রোগ্রাফিক ম্যাপ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে কিছু কিছু স্থানে লিকেজের কারণে ব্লক সরে গেছে। কিন্তু নদীর তলদেশের স্তর এখনো স্বাভাবিক রয়েছে। এতে শংকিত হওয়ার কিছু নেই।

“তলদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ফাটল দেখা দিত এবং ব্লকগুলো দেবে গিয়ে বাঁধ এলাকায় ভাঙন শুরু হতো,” বলেন তিনি।

জীবন কুমার আরো বলেন, মোলহেডসহ চাঁদপুর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে আকস্মিকভাবে দেবে যাওয়ার আরেকটি কারণ হলো, শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ডোবা ও পুকুর। যেগুলোর পানি শুকনো মৌসুমে নদীর পানির স্তর যখন নেমে যায় তখন ওইসব ডোবা-পুকুরের পানি লিকেজ হয়ে নদীতে পড়ে গর্তের সৃষ্টি হয়।

এভাবে এক সময় শহরের পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকাটি বিপজ্জনকভাবে দেবে গিয়েছিল বলে তিনি জানান।

অপরিকল্পিত জলাশয় ও পুকুর ভরাট করলে শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষা পাবে বলে মত দেন তিনি।

গত রোববার শহর রক্ষা বাঁধের বড় স্টেশন মোলহেড এলাকায় মেঘনার প্রচণ্ড স্রোতে বিভিন্ন স্থানের ব্লক দেবে যায়। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ওই এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সব ধরনের স্থাপনা সরিয়ে ফেলে এবং জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

সোমবার মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

পাউবো ৮০ মিটার এলাকাকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করে রোববার দিনভর বালুভর্তি ৭৪টি ব্যাগ এবং সোমবার দুপুর পর্যন্ত ৬৭টি ব্যাগ ফেলেছে।