রোগী বেড়ে যাওয়ায় এসব শিশুকে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। অন্যদিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সীমিত হওয়ায় রোগীদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশুরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সৈয়দা রূখসানা পারভীণ।
তিনি জানান, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশি, খিচুনি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। ১৫ দিন থেকে দুই মাস বয়সী শিশুরা বেশি অসুস্থ হচ্ছে।
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গজালিয়া গ্রামের গৃহবধূ সোনিয়া বেগম জানান, তার এক মাস ১৪ দিন বয়সী ছেলে আরাফাতকে গত শুক্রবার (২৯ অগাস্ট) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এক সপ্তাহ আগে তার ঠান্ডা লাগে। এরপর থেকে জ্বরের সঙ্গে কাশি হয়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়ার পরও সুস্থ না হওয়ায় হাসপাতালে আনেন।
মুক্তা বেগম নামে এক অভিবাবক জানান, পাঁচ মাস বয়সী ছেলে স্বপ্নকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে বেড খালি না থাকায় মেঝেতে জায়গা হয়েছে।
“মেঝেতে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। তারপরও ছেলেকে সুস্থ করতে বাধ্য হয়ে আরো কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।”
সদর হাসপাতালের শিশু ওর্য়াডের সেবিকা যুথিকা মন্ডল জানান, এখানে শিশু ওয়ার্ডে মাত্র ১২টি বেড রয়েছে। আসন সংকুলান না হওয়ায় কোনো কোনো আসনে তিনজন করে শিশুকে রাখা হয়েছে। তবে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ শিশুদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সহকারী আলতাফ মাহমুদ বলেন, প্রতিদিন গড়ে অন্তত দুই শতাধিক শিশুর অভিভাবক টিকিট সংগ্রহ করে হাসপাতালে সেবা নিতে আসেন।
“মাসখানেক ধরে শিশু ওর্য়াডের রোগীর খুব চাপ বেড়েছে। গত এক মাসে প্রায় ছয় হাজার শিশু চিকিৎসাসেবা নিয়েছে।”
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডা. মো. বাকির হোসেন জানান, শিশুদের ওয়ার্ডটিতে মাত্র ১২টি বেড রয়েছে। সম্প্রতি শিশুরোগ বেড়ে যাওয়ায় শিশু ওয়ার্ডে আসন সংকট দেখা দিয়েছে। তাই রোগীদের মেঝেতে থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে।
এই মুহূর্তে কিছুই করার নেই জানিয়ে তিনি বলেন, বাগেরহাট সদর হাসপাতালটি একশ শয্যা থেকে আড়াইশ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। হাসপাতালের অবকাঠোমোর উন্নয়ন কাজ চলছে। সেটি শেষ হলে সব ধরনের রোগীকে বেডে রেখে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে।