শিশুদের কথা শিশুরা লিখবে: হাসান আজিজুল হক

বড়রা কখনো শিশুদের কথা লিখতে ভুলে গেলেও শিশু অধিকার আদায়ে শিশু সাংবাদিকেরা তাদের কথা লিখে যাবে বলে আশা প্রকাশ করলেন সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2014, 07:05 PM
Updated : 29 August 2014, 07:06 PM

শিশু-কিশোরদের জন্য বিশ্বের প্রথম বাংলা সংবাদ পোর্টাল ‘হ্যালো’র সাংবাদিক উৎসবের অংশ হিসাবে শুক্রবার রাজশাহীতে আয়োজিত শুভার্থী সভায় অংশ নিয়ে তিনি বললেন, এই পেশা মেধাবীদের দখলে থাকতে হবে।

“সাংবাদিকতা এতোদিন বড়দের দখলে ছিল। এখন ছোটদের মাঝে যে উদ্দীপনা দেখলাম তাতে আমি আশাবাদী- একদিন তারাই এ জাতির আলোকচ্ছটা ছড়িয়ে দেবে সারা বিশ্বে। নিজেদের অধিকার আদায়ে তাদের লেখনি বড় ভূমিকা রাখবে।”

রাজশাহীর চেম্বার অব কমার্স ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে বরেণ্য এই সাহিত্যিক বলেন, “পত্রিকার পাতায় প্রায়ই বড়রা সংবাদ করে- গৃহকর্মীকে নির্যাতন করা হয়েছে, পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। শরীর দগ্ধ এই সমাজ ব্যবস্থায় ফাটল ধরিয়ে তরুণরা লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরবে তাদের বঞ্চনার কথা। তুলে ধরবে বৈষম্যের কথা।”

সম্প্রতি গাজায় শিশু নির্যাতনের কথা তুলে ধরে হাসান আজিজুল হক আগামী দিনের সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “সাংবাদিকতা একটি শক্তশালী পেশা। আজ তোমাদের কথা কেউ শুনতে না চাইলেও শিশু সাংবাদিকতায় তোদের কথা পুরো জাতি জানবে।”

একুশে পদক পাওয়া এই সাহিত্যিক ‘হ্যালো’র এই উদ্যোগের জন্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, শিশুদের বিকাশের জন্য সবার আগে পরিবারের সদস্যদের এগিয়ে আসতে হবে। তাদের সন্তানদের প্রতিভার বিকাশে সহায়তা করতে হবে।

“শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে, কিন্তু উন্নতি হয়নি বিবেকের। উন্নতি হয়নি আমাদের মেধার। সেই মেধার উন্মেষ ঘটাতে শিশু সাংবাদিকতা বিরাট ভূমিকা রাখবে।”

রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, “বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বরাবরই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে সেরা। আর তারা তৃণমূল পর্যায়ে যেভাবে শিশু সাংবাদিক অন্বেষণ করছে তা সত্যিই প্রশংসার ব্যাপার।”

চলতি বছর 'হ্যালো'র সাংবাদিক বাছাই কার্যক্রম শুরু হয় গত ২২ অগাস্ট। ‘আমার কথাও যাবে বহুদূর’ স্লোগানে ২৩ জেলায় একযোগে এ কর্মসূচি চলছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নেয়া এই উদ্যেগে এবার গ্রামীণফোনও অংশীদার।

রাজশাহীতে হ্যালো’র সঙ্গে কাজ করতে গত ২২ অগাস্ট লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয় নগরীর ১৪টি স্কুলের ১১৭ জন শিক্ষার্থী। ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ২১জন শিক্ষার্থী গত ২৭ ও ২৮ অগাস্ট কর্মশালায় অংশ নেয়।

শুক্রবার শুভার্থী সভার পর ১১৭ জন শিশু সাংবাদিকের হাতে তুলে দেয়া হয় স্মারক। সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন রাজশাহীর সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পারাবার’ এর শিল্পীরা।

অন্যদের মধ্যে হ্যালোর নাহার মাওলা, স্থানীয় সাংসদ আয়েন উদ্দীন, স্থানীয় দৈনিক সানশাইনের সম্পাদক তসিকুল ইসলাম বকুল, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ স¤ম্পাদক ও জনকণ্ঠের রাজশাহী ব্যুরোর মামুনুর রশিদ, রাজশাহী শহর রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামায়াত খান, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী শিক্ষক বারী আহম্মেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের রাজশাহী প্রতিনিধি বদরুল হাসান লিটন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এস এম নাদিম মাহমুদ।