বুধবার অভিযোগ গঠনের জন্য শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ আদেশ দেন।
এর আগে আসামি পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে নয় দফায় মামলাটির শুনানির তারিখ পেছান হয়।
অব্যাহতি পাওয়া দুই চিকিৎসক হলেন সুরমান আলী ও জাকির হোসেন।
বিচারকের এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন না করে তাদের অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আদেশ দিয়েছেন।
“অপচিকিৎসার ঘটনায় করা এ ধরনের মামলায় এরকম আদেশে আমরা সংক্ষুব্ধ। আমরা অবশ্যই উচ্চ আদালতে যাব।”
গত বছরের ২৮ জানুয়ারি মহানগর হাকিম আদালতে ওই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রোগীর মা। পরে অভিযোগ গঠন বিষয়ে বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করেন।
এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২৭ অগাস্ট তারিখ দেয় বিচারক।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩০ মে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে রোগী আমিনুল ইসলামের মলদ্বারে অস্ত্রোপচার করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জন সুরমান ও বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক জাকির। রোগীর ব্যাথা না কমায় দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচার করেন তারা।
তার পরও ব্যাথা থাকায় অমিনুলকে কলকাতায় অ্যাপোলো হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট দেবাশীষ দত্ত অস্ত্রোপচার করেন। পরে সেখানে একটি সুঁচ পাওয়া যায়।
দেশে ফিরে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আমিনুলের মা দেলোয়ারা বেগম। আদালত তা মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য পাঁচলাইশ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। ওই থানার এসআই রহুল আমিন গত বছরের ৩০ মে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। একই বছরের ৩ জুন আসামি সুরমান আলীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
পরদিন থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এবং চট্টগ্রামের চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত ও বেসরকারিভাবে পরিচালিত ক্লিনিকগুলোতে অনির্দিষ্টকালের জন্য চিকিৎসা বন্ধের ঘোষণা দেন।
এর দুইদিন পর ৬ জুন আদালতের নির্দেশে সুরমান আলী জামিন পেলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন চিকিৎসকরা।
এরপর গত বছরের সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, ডিসেম্বর, চলতি বছরের জানুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল, মে, জুন ও সর্বশেষ ১৭ জুলাই মোট নয় দফায় আসামি পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে যায়।
অবশেষে দশম নির্ধারিত দিনে মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়।