সংস্থাটি বলছে, দুর্নীতির তথ্য থাকলেও অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা না হওয়ায় তারা মামলা পর্যন্ত যেতে পারছে না।
অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির অভিযোগে দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনী হলফনামাকে ভিত্তি করে গত ২২ জানুয়ারি কমিশনের এক বৈঠকে মহাজোট সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান, ঢাকার সংসদ সদস্য আসলামুল হক, কক্সবাজারের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, রাজশাহীর সংসদ সদস্য এনামুল হক, এম এ জব্বারের সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
এদের মধ্যে আব্দুল মান্নান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সালমা ইসলামের কাছে পরাজিত হন। বাকি ছয় জন বর্তমান সংসদে রয়েছেন।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান এম বদিউজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কমিশনের কাছে দুর্নীতির তথ্য থাকলেও অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা না হওয়ায় কবে নাগাদ মামলা হবে সে বিষয়ে কমিশন এখনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।”
২২ জানুয়ারির ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আ ফ ম রুহুল হকের সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান দুদকের উপপরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম আলম, আব্দুল মান্নান খানের উপপরিচালক শেখ নাসিরউদ্দিন এবং সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান উপপরিচালক খায়রুল হুদা।
এছাড়া উপপরিচালক শেখ ফয়েজ আলম সংসদ সদস্য আসলামুল হক, উপপরিচালক আহসান আলী সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, উপপরিচালক সৈয়দ তাহসীনুল হক সংসদ সদস্য এনামুল হক এবং উপপরিচালক মাহমুদুর রহমান সংসদ সদস্য আব্দুল জব্বারের সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান।
প্রাথমিক অনুসন্ধানের দুই মাসের মাথায় দুদক কমিশনার নাসিরউদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, তারা প্রাথমিক অনুসন্ধানে সাত জনের অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছেন।
গত ২৫ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক দুদক সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী দুদকের অনুসন্ধান কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলেও জানান।
তবে এ বিষয়ে গত ২৭ জুলাই দুদকের অনুসন্ধান সেলের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের কাছে কোন আপডেট তথ্য নেই। মামলা করতে হলে তো অনুসন্ধান প্রতিবেদন আমাদের হাতে আসতে হবে। প্রতিবেদন তো দূরে থাক, এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে খসড়া প্রতিবেদনও জমা পড়েনি।”
কোন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কমিশনের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে প্রেরণ করার দায়িত্ব অনুসন্ধান সেলের।
তিনি আরো বলেন, “কবে নাগাদ প্রতিবেদন জমা হবে এ বিষয়েও কোন কর্মকর্তা আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানাননি।”
দুদক চেয়ারম্যান এম বদিউজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কমিশনে এখন পর্যন্ত কোন প্রতিবেদন জমা পড়েনি। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়েও আমরা এখনো কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি।”
“আমাদের কাছে দুর্নীতির তথ্য রয়েছে, অনুসন্ধানও চলছে। প্রতিবেদন কমিশনে জমা হলে মামলা করার বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।”
প্রতিবেদন কবে নাগাদ জমা পড়বে এমন কোন সময়সীমা অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওইভাবে কোন সময়সীমা নির্দিষ্ট করা হয়নি।”
দুদকের কার্যবিধি অনুযায়ী যে কোন অনুসন্ধানের জন্য ৯০ কার্যদিবস (প্রায় ৪ মাস) নির্দিষ্ট করা থাকে।
তবে দুর্নীতির পরিমান ব্যাপক ও বিস্তৃত হলে একটি প্রাথমিক খসড়া প্রতিবেদন দাখিল করে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা কমিশন বরাবর আরো সময় চাইতে পারেন।