বাংলাদেশের সঙ্গে ‘১০০ সীমান্তহাট’ চায় ত্রিপুরা

বাংলাদেশের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে বাণিজ্য বাড়াতে অন্তত একশ ‘সীমান্তহাট’ চালুর আগ্রহের কথা জানিয়েছেন ভারতের ত্রিপুরার একজন পার্লামেন্ট সদস্য।

ভারত প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2014, 07:25 AM
Updated : 30 July 2014, 07:25 AM

ভারতের উত্তরপশ্চীমাঞ্চলীয় আরেক রাজ্য মেঘালয়ও বাংলাদেশের সঙ্গে ২২টি সীমান্তহাট চালুর প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক এক সেমিনারে ত্রিপুরা থেকে নির্বাচিত জিতেন চৌধুরী সীমান্তহাটের বিষয়টি সামনে আনেন।

কলকাতার মওলানা আজাদ ইন্সটিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজে সেমিনারে জিতেন চৌধুরী বলেন, “আমাদের রাজ্যবাসীরা বাংলাদেশের সঙ্গে উন্মুক্ত সীমান্ত চায়। কিন্তু কাঁটাতারের বেড়ার কারণে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এখানকার মানুষ সম্ভাব্য সব সুবিধাজনক স্থানে সীমান্তহাট চায়।”

পরে স্থানীয় একটি ওয়ব সাইটেও (www. tripurainfoway.com ) একই দাবি তুলে তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা বাংলাদেশের সঙ্গে উন্মুক্ত বাণিজ্য চায়। আর সীমান্তহাট চালুর বিষয়টি তাদের এই চাওয়ারই অংশ।

দুই দেশের সম্মতিতে ত্রিপুরা, আসাম, মিজোরাম এবং মেঘালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তে এ ধরনের হাট চালুর সিদ্ধান্ত হয় ২০০৯ সালে। এরপর ২০১১ সালে কুড়িগ্রাম সীমান্তে চালু হয় প্রথম সীমান্ত হাট।  

এছাড়া বাংলাদেশ সীমান্তে আরো চারটি হাট চালুর বিষয়ে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের প্রস্তাবে ইতোমধ্যে সম্মতি দিয়েছে ভারতের কেন্দ্র সরকার। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এসব হাট স্থাপনে দুই থেকে তিন কোটি রুপি বরাদ্দও দিয়েছে।

ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রস্তাবিত চারটি হাটের মধ্যে দ্বিতীয়টি চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয় গত মে মাসে। এ রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণের সীমান্ত শহর সাবরুমে প্রথম হাটটি চালুর কাজ চলছে।

তবে সীমান্তহাট বাড়ানোর জন্য ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের কাছে একের পর এক অনুরোধ আসছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। বিশেষ করে শাসক দলের স্থানীয় ইউনিটগুলো থেকে অধিকাংশ অনুরোধ এসেছে।

একই অবস্থা মেঘালয় রাজ্যেও। এই রাজ্যের সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে ২২টি সীমান্ত হাট চালুর প্রস্তাব এরই মধ্যে চূড়ান্ত করে ফেলেছে বলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা সম্প্রতি ত্রিপুরার একটি অনলাইন সংবাদপত্রকে জানান।

জিতেন চৌধুরী বলেন, “যদি জনগণের চাহিদার প্রতি সাড়া দিতে হয়, তাহলে আমাদের অন্তত ১০০টি হাট চালু করতে হবে। স্থানীয় চাহিদার কারণে এক্ষেত্রে বিএসএফেরও সায় আছে।”

সীমান্তবাসীর আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বাড়ানোর লক্ষে ২০১১ সালের ২৩ জুলাই মেঘালয়ের সঙ্গে কুড়িগ্রামের রাজীবপুরের বালিয়ামারী সীমান্তে প্রথম সীমান্তহাটের উদ্বোধন করা হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমারেখার মধ্যে এই সীমান্তহাট বসে সপ্তাহে এক অথবা দুইদিন।

এসব হাটে একজন সর্বোচ্চ ৫০ ডলারের পণ্য কেনাবেচা করতে পারেন। এক্ষেত্রে দুই দেশের বাসিন্দারা নিজ নিজ মুদ্রা ব্যবহার করতে পারেন। এ হাটের কেনাবেচা সব ধরনের করমুক্ত।

সীমান্ত এলাকায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষি পণ্য, মাছ ও শুঁটকি পণ্য, মসলা, কাঠের আসবাবপত্র, দুগ্ধ ও পোল্ট্রি পণ্য, কুটির শিল্প, তাঁত ও হাতে তৈরি কাপড় ইত্যাদি এসব হাটে বিক্রির অনুমতি রয়েছে।