পানি উন্নয়ন বোর্ডের সোয়া ১৩ কোটিরও বেশি টাকার এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্টারলাইট সার্ভিস লিমিটেড।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাজের শুরু থেকেই ব্লক তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। অনিয়মের প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয়নি, উল্টো মামলাসহ নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।
‘লুটপাটের’ প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এতে কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকার পর আবার একইভাবে কাজ চলছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
স্থানীয় যুবক মো. রাসেল মিয়া, শহিদুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা এবং ব্যবসায়ী নেতা মো. মোতালেব শরীফ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ করেন।
কুয়াকাটা গেস্ট হাউজের মালিক ও পর্যটন নগরীর হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাকে রক্ষায় বেড়িবাঁধে মানসম্মত ও টেকসই সিসি ব্লক নির্মাণের কথা থাকলেও তা করা হয়নি।
“এখানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে নামমাত্র উন্নয়ন কাজটি চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। তাদের তৈরি করা সিসি ব্লক হাত দিয়ে চাপ দিলেই গুঁড়ো হয়ে যায়,” বলেন তিনি।
সাগরের ভাঙনের কবল থেকে কুয়াকাটাকে রক্ষার বেড়িবাঁধকে এ ধরনের নিম্নমানের ব্লক দিয়ে টেকানো যাবে না বলে দাবি করেন তিনি।
কলাপাড়া পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সফিউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিশ্ব ব্যাংক ও নেদারল্যান্ডস টুরিস্ট ফান্ডের যৌথ অর্থায়নে ২০১১ সালে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলাপাড়া পাউবোর আওতায় ৪৮নং পোল্ডারের ৮০০ মিটার বেড়িবাঁধ স্লোপ সংরক্ষণ সিসি ব্লক পাইলিং কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়।
১৩ কোটি ২২ লাখ ২২ হাজার ১৭৭ টাকার এ প্রকল্পের কার্যাদেশ দেয়া হয় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্টারলাইট সার্ভিস লিমিটেডকে।
সর্বশেষ বেঁধে দেয়া ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বরেও কাজটি সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি, বলেন সফিউদ্দিন।
তবে এখন কাজটি প্রায় শেষের দিকে বলে জানান তিনি।
কাজের অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, “বিশ্ব ব্যাংকের নিজস্ব কর্মকর্তা মনিটরিং করেন এবং সঙ্গে আমাদের কর্মকর্তারাও থাকেন, তারপরও কী বলব ঠিকাদারের জাতটাই এ রকম, ফাঁকি দেয়া।”
তবে, কাজ ত্রুটিপূর্ণ হলে ঠিকাদারের চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হবে না বলে জানান প্রকৌশলী সফিউদ্দিন।
ঢাকা স্টারলাইট লিমিটেডের প্রতিনিধি কিশোর কুমার দে এলাকাবাসীর সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্থানান্তরের সময় কিছু ব্লক ভেঙে যেতে পারে। তবে, কাজটি নিয়মের মধ্যেই চলছে।