এবি সিদ্দিকের জবানবন্দি খতিয়ে দেখছে পুলিশ

এবি সিদ্দিকের অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে জবানবন্দিতে তার দেয়া তথ্যগুলো খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নিজস্ব প্রতিবেদকও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2014, 02:04 PM
Updated : 19 April 2014, 02:57 PM

শনিবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

সিদ্দিক অপহরণের ঘটনার পর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসানের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটির কমিটির অন্যতম সদস্য মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সিদ্দিককে পাওয়া গেলেও এই ঘটনার পেছনে কারা ছিল তা বের করার জন্য এখন তারা কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য সিদ্দিকের দেওয়া তথ্য পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

অপহরণের প্রায় ৩৫ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে কলাবাগানে তল্লাশির সময় এবি সিদ্দিককে পায় পুলিশ। শুক্রবার তিনি নারায়ণগঞ্জের আদালতে জবানবন্দি দেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, এবি সিদ্দিক অপহরণের ঘটনায় পুলিশ তার সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে তাকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়েছে। তিনি উদ্ধারের পর যেসব আইনগত প্রক্রিয়া রয়েছে-সেগুলো সম্পন্ন করা হয়েছে।

“তিনি উদ্ধার হলেও মামলা থেমে থাকবে না, তদন্ত কাজ চলবে। আদালতে দেয়া তার জবানবন্দি আমলে নিয়ে পুলিশ গুরুত্ব সহকারে মামলাটি তদন্ত করছে।”

গত বুধবার বিকালে ফতুল্লার দাপা এলাকায় পোশাক কারখানা থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ভূঁইগড় এলাকার ভূঁইয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে পরিবেশ আইনজীবি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী আবু বকর সিদ্দিককে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় রিজওয়ানা বাদি হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলায় তিনি বলেন, “আমি একজন আইনজীবি এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী। পেশাগত কারণে আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করে আসছি, যা অনেকের অর্থনৈতিক স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করেছে।

“প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এসব মহল বিভিন্ন সময়ে আমার বিরুদ্ধে প্রচার মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালিয়েছে এবং বিভিন্নভাবে আমাকে আমার কার্য থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করেছে। আমার স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে তার কোন যোগসূত্র থাকতে পারে।”

অপহৃতকে উদ্ধার এবং রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ সদর দপ্তর এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাজ্জাদুর রহমানকে প্রধান করে ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা পুলিশ।

শনিবার বিকালে ফতুল্লার ভূঁইগড়ের অপহরণের স্থান এবং এবি সিদ্দিকের কর্মস্থল হামিদ ফ্যাশনসের কারখানা পরিদর্শন করেছে সদর দপ্তরের পাঁচ সদস্যের কমিটি।

এসময় কমিটির প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মো. মারুফ হাসান, সদস্য সচিব নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান, কমিটির সদস্য ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম, র‌্যাব-৩ এর উপ-পরিচালক মেজর মো. সাদিকুর রহমান এবং পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।

জেলা পুলিশ সুপার নুরুল বলেন, তদন্ত দল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ভূইঁগড় ঘটনাস্থল (অপহরণের স্থান), পোস্ট অফিস, শিবু মার্কেট সড়ক ও তার কারখানা হামিদ ফ্যাশন পরিদর্শন করেছে।

এদিকে বিকালে নারায়ণগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মনোয়ারা বেগমের আদালতে আবু বকর সিদ্দিককে বহনকারী সিএনজি অটো রিকশা চালক হাফিজুর রহমান ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।