সরকার আমাদের স্তব্ধ করে দিতে চায়: ইমরান

‘প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাওয়ায়’ গণজাগরণ মঞ্চের কণ্ঠস্বরকে সরকার ‘স্তব্ধ’ করে দিতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2014, 10:52 AM
Updated : 12 April 2014, 10:52 AM

শনিবার দুপুরে সরকার সমর্থক একদল সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মী নিজেদের গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক দাবি করে ইমরান সরকারকে মুখপাত্রের দায়িত্ব থেকে ‘অব্যাহতি’ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার পর তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাম্প্রতিককালে আওয়ামী লীগসহ তাদের সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্যে বলেছেন গণজাগরণ মঞ্চের আর কোনো প্রয়োজন নেই। এরপরই শাহবাগে ছাত্রলীগের হামলা হলো, পুলিশের হামলা হলো, এবার সংবাদ সম্মেলন করা হলো।”

‘গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও সংগঠক’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান কামাল পাশা চৌধুরী, যিনি জাহানারা ইমামের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধাপরাধ বিচারের দাবি আন্দোলনের সহযোগী সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র কমান্ডের আহ্বায়ক ছিলেন।

ইমরান অভিযোগ করে বলেন, “এসব থেকে খুব সহজেই ধারণা করা যায়, সরকার গণজাগরণ মঞ্চের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দিতে চায়। ধ্বংস করে দিতে চায়। আর এ কারণেই পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের কাজ করা হচ্ছে।”

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার প্রতিবাদ করায় সরকার সমর্থক সংগঠনগুলো এমন করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

যারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তাদের অনেককে চেনেন না জানিয়ে ইমরান বলেন, “এদের কখনো দেখেছি বলে আমি মনে করতে পারছি না। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে শুনেছি, আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার নেতৃত্বে এ সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। এখানে যারা ছিলেন তারা বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের কমিটি-উপকমিটিতে রয়েছেন।”

মঞ্চনেতা ইমরান বলেন, “এ মঞ্চ কোনো রাজনৈতিক দলের তৈরি নয়। তাই মঞ্চের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ারও তাদের নেই। সাধারণ মানুষ এ মঞ্চ তৈরি করেছে তাই মঞ্চের যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার তাদের। জনগণই ঠিক করবে গণজাগরণ মঞ্চ কিভাবে চলবে, এর ভবিষ্যত কী হবে।”

শুক্রবার হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর বক্তব্যের বিষয়টি টেনে এনে তিনি বলেন, “গতকাল হেফাজত যে বক্তব্য দিয়েছে, তা থেকেও বোঝা যায় সরকারের অবস্থান এখন গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে।

“মুখপাত্র হিসেবে যেহেতু আমাকেই বারবার টার্গেট করা হচ্ছে তাই বলতে চাই, আমার দায়িত্ব এখন আরো বেড়ে গেছে। আমি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।”

গত ৩ এপ্রিল রাতে শাহবাগভিত্তিক দুই সংগঠনের মারামারিতে জাগরণ মঞ্চের দুই কর্মী আহত হন।

অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই গত শুক্রবার বিকালে শাহবাগে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুখপাত্র ইমরান।

এরই মধ্যে এক সংবাদ সম্মেলন করে মঞ্চে দলাদলির জন্য ইমরানকে দায়ী করে সরকার সমর্থক পাঁচটি ছাত্রসংগঠনের নেতারা, যারা শুরু থেকেই আন্দোলনের পাশাপাশি মঞ্চে সংগঠকের ভূমিকায় ছিলেন।