ইমরানকে ‘অব্যাহতি’ দিয়ে শাহবাগে সংবাদ সম্মেলন

নিজেদের গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক দাবি করে ইমরান এইচ সরকারকে মুখপাত্রের দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবির আন্দোলনের কয়েকজন।

ঢাবি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2014, 09:30 AM
Updated : 12 April 2014, 06:33 PM

শনিবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এখন থেকে পাঁচ সদস্যের একটি প্যানেল মঞ্চের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবে, যাদের নাম অচিরেই জানানো হবে।  

‘গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও সংগঠক’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান কামাল পাশা চৌধুরী, যিনি মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র কমান্ডের নেতা।

উপস্থিত ১৫-২০ জনের মধ্যে অর্ধেকই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাদের মধ্যে ছিলেন- কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক শিউলি বিনতে মহসিন, সোহেলী পারভিন মনি, হামিদা বেগম, উপ-কমিটির সদস্য এস এম এনামুল হক আবির, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সহ-সম্পাদক রাশিদা হক কনিকা।

এছাড়াও ছিলেন গৌরব-৭১ এর সভাপতি আজাদ আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন, অপরাজেয় বাংলা’র সভাপতি এইচ রহমান নিলু প্রমুখ।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সঙ্গে ইমরান নেতৃত্বাধীন আন্দোলনকারীদের মারামারি ও পাল্টাপাল্টি মামলার মধ্যে এই সংবাদ সম্মেলন হল।

ওই মারামারি ঘটনায় ইমরান অভিযোগ করেছিলেন, ছাত্র-যুবলীগের মদদে তাদের ওপর হামলা হয়েছে।

তবে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পরে সংবাদ সম্মেলন করে ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ছাত্রলীগ।      

কামাল পাশা বলেন, “বিতর্কিত হয়ে পড়ার কারণে ডা. ইমরান এইচ সরকারকে সাময়িকভাবে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো।

“এই মুহূর্ত থেকে তার কোনো বক্তব্য ও কর্মসূচি গণজাগরণ মঞ্চের বক্তব্য ও কর্মসূচি বলে বিবেচিত হবে না।”

যুদ্ধাপরাধী আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার রায় প্রত্যাখ্যান করে গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে শুরু হয় সাড়াজাগানো গণজাগরণ আন্দোলনের।

বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্মিলিত এই আন্দোলনে প্রথম দিন থেকেই মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ইমরান।

ইমরানকে কিভাবে অব্যাহতি দেয়া হল- জানতে চাইলে কামাল পাশা বলেন, “তিনি যেভাবে মুখপাত্র হয়েছিলেন; সেভাবেই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।”

ইমরান কিভাবে মুখপাত্র হয়েছিল- জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত এ এস কামারুজ্জামান বলেন, “আমাদের মধ্যে যাতে শৃঙ্খলা ভঙ্গ না হয়, এজন্য সবাই মিলে একজনকে মিডিয়ার সামনে কথা বলার দায়িত্ব দিয়েছিলাম।

“কথা ছিল সকল সিদ্ধান্ত সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করতে হবে। কিন্তু পরবর্তীতে ইমরান কারো সঙ্গে কথা না বলে নিজের একক সিদ্ধান্তে বিভিন্ন ব্যাপারে বক্তব্য রাখতেন এবং কর্মসূচি দিতেন।”

গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের শুরু থেকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনগুলো থাকলেও ইমরানবিরোধী এই সংবাদ সম্মেলনে কোনো ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি ছিলেন না।

এ বিষয়ে কামাল পাশা বলেন, “আন্দোলন শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দুইশ’ পাঁচটি সংগঠন সংহতি প্রকাশ করেছে।আমরা অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি; তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে।”   

গণজাগরণ মঞ্চের গত এক বছরের আন্দোলনে ইমরানের সঙ্গে বিভিন্ন সংগঠনের যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজকদের দেখা যায়নি।

এই বিষয়ে কামাল পাশা বলেন, “শুরু থেকেই আমরা ছিলাম, আমরা শুরুর দিকে বিভিন্ন মিডিয়াতে ইন্টারভিউ দিয়েছি। পরবর্তীতে শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকায় একজনকে কথা বলতে দিতাম।”

তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সব পর্যায়ে থাকতেন বলে দাবি করেন তিনি।

এদিকে এই সংবাদ সম্মেলনের প্রতিক্রিয়ায় ইমরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকার এখন গণজাগরণ আন্দোলন বন্ধ করতে চায়, তারই অংশ হিসেবে এই ‘চক্রান্ত’।