প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংসদে ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন বিরোধী দলের সদস্যরা।
Published : 19 Jun 2013, 11:31 AM
নিজের পরিবার, হেফাজতে ইসলামীর কর্মীদের ওঠাতে অভিযান এবং টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার সংসদে এই অভিযোগ করেন তিনি।
ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদের স্ত্রী ইহুদি বলে সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়ার বক্তব্য ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমার ছেলের বউকে তারা ইহুদি বানিয়ে দিয়েছে। আমার ছেলের বউ ইহুদি নয়, সে খ্রিস্টান।
“ইহুদি অবশ্য কামাল সাহেবের (ড. কামাল হোসেন) মেয়ের জামাই। তারা বোধ হয় ওটা বলতে গিয়ে আমার ছেলের বউয়ের কথা বলেছে।”
গত ৫ মে হেফাজতে ইসলামকে ওঠানোর অভিযানে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১ লাখ ২০ হাজার গুলি যদি ফোটানো হয়ে থাকে, প্রত্যেকটা বিল্ডিংয়ে তো গুলির দাগ থাকবে। আড়াই-তিন হাজার মানুষ মারলে ওই এলাকার কী অবস্থা হবে?
“ইসলামের নামে যে অসত্য কথা বলে আসছে ঘরে ঘরে। সারা বাংলাদেশে মহিলাদের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে- ভারত থেকে ট্রাক এসে লাশ নিয়ে গেছে। রুয়ান্ডার ভূমিকম্পের ছবি, জোন্স টাউনের ১৯৭৯ সালের ছবি।”
“গায়ে রঙ লাগিয়ে পড়ে ছিলো, পুলিশ গেলে ‘লাশ’ উঠে দৌড় মারলো,” ৫ মের ঘটনা বর্ণনা করে বলেন তিনি।
অভিন্ন নদীর পানি ভারত দিচ্ছে না বলে বিরোধীদলীয় সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পানি আমরা যথাযথ পাচ্ছি।”
টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেন, “এটা তো অনেক আগে শুরু হয়েছে। আপনারা কিছু বললেন না। এরশাদ সাহেব কিছু বললেন না। এটা নিয়ে আমাদের অর্থমন্ত্রী সিলেটে প্রথম আন্দোলন শুরু করে।
“বিএনপি তিন তিন বার ক্ষমতায় ছিলো, এরশাদ সাহেব ছিলো। কই তারা তো স্থল চুক্তি নিয়ে কথা বলেননি। ওনারা ক্ষমতায় থাকতে ভারত প্রীতি। বিরোধীদলে ভারত বিরোধিতা।”
ফেনীতে ভারতের কাছ থেকে ৪৫ একর জমি সরকার এনেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এই কন্সটিটিউয়েন্সি কার? বিরোধীদলীয় নেত্রীর। আমরা তার জন্য ৪৫ একর জায়গা ভারত থেকে নিয়ে এসেছি।”
বিরোধী দলের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “পার্লামেন্টে বলেন আর যেখানে থাকেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না। যুক্তিনির্ভর কথা বলবেন। অহেতুক বিভ্রান্তিকর কথা বলবেন না।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বক্তব্য রাখেন।
তিনি তাকে নিয়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও আমির হোসেন আমু প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে তাকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন।
এর জবাবে শেখ হাসিনা মওদুদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “একজন দাওয়াতে গেছেন। নিজের খাওয়ার ইচ্ছা, কিন্তু বলতে পারছেন না; বলে, ওনার পাতে দেন। ইচ্ছাটা কার, উনারই কি ইচ্ছা? আমার সন্দেহ হচ্ছে।
‘উনি এত ঘাটের পানি খেয়েছেন, উনাকে হজম করা কঠিন। উনি বলেন একটা, করেন আরেকটা, বই লেখেন অন্য রকম।”
“উনাকে তো অনেক আগে থেকে চিনি। একবার জিয়ার সাথে, একবার এরশাদ সাহেবের সঙ্গে। এখন আবার কোন পাতের ঝোল খেতে চান?”