রাজধানী ব্রাসিলিয়ার নিকটবর্তী সামামবাইয়া শহরের আটটি বাড়ি থেকে বুধবার এই ৮০ জনকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ফেডারেল মার্শাল ডেনিস কেলিকে উদ্ধৃত করে এজেন্সি ব্রাজিল জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পেরু,বলিভিয়া বা গায়ানা হয়ে তাদের ব্রাজিলে নিয়ে যায় পাচারকারীরা। ভিসা ছাড়াই ব্রাজিলে প্রবেশের পর তারা সরকারের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। পরে পাচারকারীদের সহায়তায় তাদের কাজ জোটে হিমাগার,নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বা গাড়ির গ্যারেজে।
এই পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত ১৪ জনকে গ্রেপ্তারের জন্য ইতোমধ্যে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, যাদের চারকে সনাক্ত করা হয়েছে চক্রের মূল হোতা হিসাবে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়েছে,ব্রাসিলিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস ৮০ জনকে উদ্ধারের এই খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। তবে তদন্তের ক্ষেত্রে ব্রাজিল সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে তারা।
এই ৮০ জনের ভাগ্যে কী ঘটবে তা ঠিক করবে ব্রাজিলের শরণার্থীবিষয়ক জাতীয় পরিষদ।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ব্রাজিলে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ‘ফ্রিডম’ নামে এক বিশেষ অভিযান শুরু করে দেশটির পুলিশ। এর অংশ হিসাবেই বুধবারের অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৮০ জনকে। সেখানে তারা খুবই মানবেতরভাবে জীবন যাপন করছিলেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে ৩৯ জন বাংলাদেশি ব্রাজিলে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করলেও পরের বছর এ সংখ্যা ১১১ জনে পৌঁছায়।
মিলাদ আহমেদ (৩৫) নামের এক বাংলাদেশি ব্রাজিলের এসতাদাও ডি সাও পাওলো পত্রিকাকে বলেন, তাকে পারানা স্টেটের পোল্ট্রি খামারে কাজ দেয়ার কথা বলে আনা হলেও পরে নিয়ে আসা হয় ব্রাসিলিয়ায়। বর্তমানে তার কাছে কোনো টাকা পয়সা নেই, চাকরিও নেই।
ব্রাজিলে নির্মাণপ্রতিষ্ঠান, কসাইখানা বা ভারতীয় রেস্তোরাঁয় কাজ করতে রাজি থাকলেও পুলিশি হয়রানির ভয়ে দেশে ফিরতে রাজি নন এই বাংলাদেশি।
ব্রাজিলের বিচারমন্ত্রী পল আব্রাম বুধবার ব্রাসিলিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, যারা পাচারের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছেন, সরকার তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নেবে।