সংঘর্ষের সময় অন্তত দুজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোদাগাড়ীতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ির জামায়াত নেতা মুজাহিদ হোসেন (৪৫) এবং ভাগমন্তপুর গ্রামের মোস্তফা আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (১৩)।
রফিকুল স্থানীয় আয়েশা সাবের দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বাবা মোস্তফা আলী জামায়াতের স্থানীয় নেতা।
গুরুতর আহত গোদাগাড়ী থানার এসআই মোবারক হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জামায়াত-শিবির কর্মীরা তাকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন।
“আত্মরক্ষার্থে বিজিবি গুলি চালালে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে রফিকুল ও মুজাহিদ মারা যান।”
গুলিবিদ্ধ আরো দশ জনকে গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার আলমগীর।
এরা হলেন- উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন, শহিবুর ইসলাম (৩০), আলমগীর হোসেন (৩৫), আলম হোসেন (৩৫), তোজাম্মেল আলী (৩০), রুবেল রানা (২৫), আশরাফুল ইসলাম, (২৫), মাওলানা শহিদুর রহমান (৫০), রফিকুলের সহপাঠী মেজবাউল ইসলাম (১৫), ইসমাইল হোসেন (১৮) ও বাকপ্রতিবন্ধী আব্দুল আলীম (৪০)।
পুলিশ সুপার জানান, সকালে মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট এলাকায় প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে রাজশাহী-নওগাঁ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা।
গোদাগাড়ীর ভারপ্রাপ্ত ইউএনও আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা চলবে বলে জানান ইউএনও।
তবে দুজন মারা গেলেও এলাকায় ছয় জনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় ১৪৪ ধারার মধ্যেই হরতাল সমর্থনকরীরা দ্বিতীয় দফায় গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ি বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে বলে জানান তিনি।
মহানগর পুলিশ কমিশনার মনির-উজ-জামান সাংবাদিকদের জানান, সকালে রাজশাহী শহরের বাইপাস এলাকা অভায়ের মোড়ে হরতাল সমর্থকরা রাস্তার পাশের গাছ কেটে মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় তারা একটি মালবাহী ট্রাকে আগুন দেয়।
খবর পেয়ে দমকল কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ গাছ সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে বলে পুলিশ কমিশনার জানান।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় আসার পর গত বৃহস্পতিবার সারা দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা। এরপর রোব ও সোমবার সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডাকা হয়।
বৃহস্পতিবার জামায়াতের সহিংসতার সময় গুলিতে হতাহতের ঘটনায় মঙ্গলবারও সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াতের প্রধান শরিক বিএনপি।