বৃহস্পতিবার ঢাকার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।
‘ঢাকা শহরে রিকশা ও অযান্ত্রিক বাহনের চলাচল সম্পর্কে নগর পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে করণীয়’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম আবুল কালাম সভাপতিত্ব করেন। সুপারিশগুলো তুলে ধরেন বিআইপির সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।
তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় আদিল বলেন, কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (এসটিপি) অনুসারে, ঢাকার দৈনিক ট্রিপের প্রায় ৪০ শতাংশ রিকশায় সম্পন্ন হয়। রিকশা ব্যবহারকারীদের উপযুক্ত বিকল্প না তৈরি করে সড়কে রিকশা ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না।”
ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মারুফ হোসেন জানান, ঢাকা শহরে প্রতিদিন সাড়ে তিন কোটি ট্রিপ সংগঠিত হয়, যার মধ্যে অধিকাংশ ট্রিপ হয় রিকশাভিত্তিক।
একটা সমীক্ষা থেকে তিনি বলেন, “ঢাকা শহরে অল্প দূরত্বের ট্রিপ হয় ৮০ শতাংশ, যেখানে অধিক দূরত্বের ট্রিপ হয় মাত্র ২০ শতাংশ।”
ইউএন-হ্যাবিটেট এর নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ সোহেল রানা বলেন, “রিকশার বিকল্প যানবাহন না থাকায় ব্যক্তিগত গাড়ির উপর নির্ভরশীলতা ক্রমশই বাড়বে।”
আদিল বলেন, নগরে পর্যাপ্ত বাস নামিয়ে উন্নত বাস সার্ভিস চালু করা, চক্রাকার বাস সার্ভিসের মতো সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য মানসম্মত কমিউনিটিভিত্তিক ‘প্যারা-ট্রানজিট’ ব্যবস্থা চালু করা দরকার।
“মানুষ যেন রিকশা কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ির যথাযথ বিকল্প খুঁজে পায়। এছাড়াও হাঁটবার জন্য মানসম্মত ও নিরবিচ্ছিন্ন ফুটপাথ নিশ্চিত করা আশু দরকার।”
পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, “ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ না কমিয়ে শহরের সুষ্ঠু পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্ভব নয়।
আদিল বলেন, শহরের রাস্তার সক্ষমতা বিবেচনা করে রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ ও ব্যবহার সুনির্দিষ্টকরণ, সড়ক থেকে পর্যায়ক্রমে অবৈধ রিকশা তুলে দিয়ে নগরের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক রিকশার লাইসেন্স প্রদান করতে হবে।
গোটা রাজধানীর জন্য জোনভিত্তিক গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন করার প্রস্তাব দিয়েছে বিআইপি।