খেলতে খেলতে চিত্রকর্ম

পুরনো খবরের কাগজের উপর শেভিং ফোম রেখে তার উপর দেওয়া হল তরল রঙ, এরপর কাঠি দিয়ে নাড়াচাড়ার পর উপরে রাখা হল সাদা কাগজ, কিছুক্ষণ পর কাগজটি উঠিয়ে পরিস্কার করে বাতাসে শুকালে দেখা যাবে চমৎকার শিল্পকর্ম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2017, 04:11 PM
Updated : 22 August 2017, 06:04 PM

রঙের খেলায় এই চিত্রকর্ম তৈরির জন্য প্রয়োজন পড়ে না প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার, যে কোনো বয়সের কেউ তৈরি করতে পারেন তা।

মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীর এগারো নম্বর সড়কে ‘মোড়’ মিলনায়তনে এই কলাকৌশল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তরুণ শিল্পী মাদিহা আতহার খান।

‘লাইভ আর্ট’ শিরোনামের এই আয়োজনে দুই ধরনের আর্টের ব্যবস্থা করা হয়। শেভিং ফোম ব্যবহারের ‘মার্বেলিং’-এ বিনামূল্যে অংশ নেওয়া গেলেও ‘ফ্লুইড আর্ট’-এ তিনশ টাকা ফি রাখা হয়।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে মাদিহা আতহার খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগে যখন বড় শিল্পীদের অনুষ্ঠান-কাজ-প্রদর্শনী দেখতাম, তখন মনে হত আমি কখনও এই জগতে ঢুকতে পারব না। কিন্তু আসলে একটা সময় কেন যেন মনে হল, রং দিয়ে খেলা করা খুবই জরুরি।

“দুই বছর আগে আমার এই আর্টের যাত্রা শুরু। আমার কাছে মনে হল, এই শিল্পকর্ম থেকে যে ভালো লাগা পাচ্ছি, সেটা অন্যদের সঙ্গেও শেয়ার করা উচিত।”

মাদিহা বলেন, ফ্লুইড আর্ট বিমূর্ত আর্টের একটা ধারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রথম জানতে পারেন। এক্রিলিক দিয়ে করা হয়, সেটাতে পানি দেওয়া হয়।

 

“এটা ঢাকা শহরে খুব বেশি জনপ্রিয় না। আমার মনে হল, এটা কেন আমি অন্য মানুষদের সাথে করছি না। তাহলে আনন্দটা ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে।”

মার্বেলিং নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এটা শেভিং ফোমের উপরে করছি। ফোমের উপরে কালি দিয়ে সেটাকে নাড়িয়ে একটা ডিজাইন সৃষ্টি করে সেখানে একটা কাগজ চেপে দেই। কাগজটা তুলে ফেললেই সুন্দর একটা বিমূর্ত শিল্পকর্ম পাওয়া যায়।

“দুটোতেই একটা ভালো লাগা আছে। তাই এর নাম দিয়েছি, আর্ট অব দ্য সোল। আমরা বলছি, এর জন্য আপনার শিল্পী হওয়া লাগবে না, প্রতিভাবান হওয়া লাগবে না।”

পরিবারের দুই সদস্যকে নিয়ে প্রদর্শনীতে আসেন ৭০ বছর বয়সী নিলুফার আবদুল্লাহ, যিনি ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকতেন। এঁকেছেন ২০০০ সাল পর্যন্ত।

তিনি বলেন, “খুব সহজে একটা শিল্পকর্ম করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। এখনকার ছেলে-মেয়েরা এখানে মনোযোগ দিলে সেটা অনেক ভালো হবে।”

নাজমুস সাবিব আহমেদ বলেন, “আমার অনেক ভালো লেগেছে। এখানে একটা জিনিস শিখতে এসেছি।”

ছোটবেলায় চারুকলার আর্ট স্কুলে কিছু দিন আাঁকাআঁকির কথা জানান তিনি।

জোশহান অ্যাডওয়ার্ড বলেন, “এই অভিজ্ঞতাটা খুবই ভালো লেগেছে। আগে কখনো করি নাই। প্রথমবার করেছি। এটা বেশ ভালো লেগেছে।

“এটা খুবই সহজ। যে চেষ্টা করবে, সেই করতে পারবে।”

এখানে এসে ফ্লুইড আর্ট করার কথা জানিয়ে নামিরা হোসেন বলেন, “এটা করতে একটা ক্যানভাসে কালি ঢেলে ঘোরাতে হয়। তাতেই একটি শিল্পকর্ম তৈরি হয়ে যায়।”