শনিবার দুপুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অনুরোধ জানান সংগঠনটির সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন।
তিনি বলেন, “যতটুকু ত্রাণ তৎপরতার খবর আমরা জানতে পারছি তা নামমাত্র, প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। বন্যা দুর্গত গৃহহীন মানুষ এখন নানাবিধ সঙ্কটে জর্জরিত।
“সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে বন্যা দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণকেন্দ্র খোলা হোক, ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করা হোক।”
বানভাসীদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে রুমন বলেন, “এদেশের সচেতন সকল মহলকে আবেদন জানাচ্ছি, এই মানবিক বিপর্যয়ের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসুন। যার যতটুকু সামর্থ্য আছে তাই নিয়ে এই বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়ান।
“সকল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও বিত্তশালী মানুষদের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, এই সঙ্কটের কবল থেকে মানবতাকে বাচাঁতে এগিয়ে আসুন।”
ত্রাণ কার্যক্রমে নারী ও শিশুদের বিশেষ সংবেদনশীল অবস্থাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে গবাদি পশুর খাবারের ব্যবস্থা করারও দাবি জানান ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি।
তিনি বলেন, “কৃষি পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কৃষকদের বিনা সুদে ঋণ দেওয়া, বিনা মূল্যে বীজ-সার ও কীটনাশকের ব্যবস্থা, ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুননির্মাণের ব্যবস্থা এবং সর্বস্ব হারানো মানুষদের গৃহনির্মাণের সামগ্রী প্রদান করা হোক।
“বিনামূল্যে বই, খাতা, শিক্ষা সরঞ্জাম শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হোক। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়বে। সেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখন থেকেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা এবং পর্যাপ্ত ওষুধের ব্যবস্থা করার দাবিও জানাচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলন থেকে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সঙ্কট’ নিয়ে পূর্বঘোষিত ২৩ অগাস্টের শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে মিছিল কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন বলেন, “সারা দেশের বন্যা দুর্গত অসহায় মানুষের সহযোগিতা করতে ত্রাণ সংগ্রহ ও বিতরণ করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন প্রিন্স, অর্থ-সম্পাদক রোকসানা আফরোজ, দপ্তর সম্পাদক শ্যামল বর্ম্মন ও সদস্য আলমগীর হোসেন সুজন উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্র ইউনিয়নের বিক্ষোভ
উত্তরাঞ্চলে বন্যা কবলিত এলাকায় দ্রুত সরকারি ত্রাণ সরবরাহের দাবি এবং সরকারি ‘নতজানু পররাষ্ট্র নীতির’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
শনিবার দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা মহানগর সংসদ।
এতে ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি জিএম জিলানী শুভ বলেন, “বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে প্রায় সব জেলাই বন্যা কবলিত হয়েছে। ৩৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য ত্রাণ সামগ্রী এখনও পৌঁছায়নি, যা খুবই দুঃখজনক।
“ছাত্র ইউনিয়ন যখন বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়াতে সাধারণ মানুষের কাছে শুকনো খাবার, ওষুধ, স্যালাইন, পোশাক, নগদ অর্থ সহযোগিতা নিচ্ছে, তখন সরকারি পুলিশ বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় বাধা প্রদান করছে।”
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি দীপক শীল বলেন, “শুকনো মৌসুমে তিস্তার ব্যারেজগুলো বন্ধ থাকে, আর বর্ষার মৌসুমে খুলে দেওয়া হয়। যার ফলে আজ ৩৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্তের শিকার।
“আমরা মনে করি সরকারি নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে আজকে ভারতের এই স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তর প্রতিবাদ সরকার করতে পারছে না। সরকারিভাবে যেসকল ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে তা তুলনামূলক কম। আবার এর অনেকটা দলীয় লোক দ্বারা লুটপাট হয়ে যাচ্ছে।”
ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক জহর লাল রায় সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে মহানগর সংসদের সহ-সভাপতি অন্তু চন্দ্র নাথ ও বিভিন্ন থানার নেতারা বক্তব্য রাখেন।