শোক দিবসের পোস্টার ছিঁড়ে ঢাবির ১১ ছাত্র পুলিশে

জাতীয় শোক দিবসের পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগে ১১ ছাত্রকে পুলিশে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল প্রশাসন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2017, 04:46 PM
Updated : 15 August 2017, 05:04 PM

ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার দুপুরে এসব ছাত্রকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী জানান।

আটকরা হলেন- ইসলামের ইতিহাসের রিয়াজ উদ্দীন, মনোবিজ্ঞানের আজিম উদ্দীন, ইসলামিক স্ট্যাডিজের মাহমুদুল হাসান, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের আসিফ হোসেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মোকসেদুল আলম ও এহসান আহমেদ, সমাজবিজ্ঞানের শাহিনুজ্জামান, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের ওবায়দুল হক ভূঁইয়া, পালি ও বুদ্ধিস্ট স্ট্যাডিজের মনির হোসেন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশনের জি এম আরাফাত ইসলাম এবং দর্শন বিভাগের জি এম বায়েজিদ ইসলাম।

জানতে চাইলে বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হলের আবাসিক শিক্ষকদের মাধ্যমে আমি বিষয়টি সম্পর্কে প্রথম জানতে পারি। হল ছাত্রলীগও এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়ে আমার কাছে বিচার চায়।”

পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে চিহ্নিত করে পুলিশে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

প্রাধ্যক্ষ বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে না করে সাধারণ অভ্যাসের বসে পোস্টার ছিঁড়ে থাকলে তাদের কেউ হয়রানির শিকার হবেন না। আর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করে থাকলে তাদের হল থেকে বের করে দেওয়া হবে।

“কারণ সবার মধ্যেই রাজনৈতিক বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকতে পারে না।”

১৫ অগাস্টের মতো শোকাবহ দিনে যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে হল প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টিকে ‘সিরিয়াসভাবে’ নিয়েছে হল প্রশাসন।

এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফকির রাসেল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন হাওলাদার।

ফকির রাসেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফেসবুকের মাধ্যমে শোক দিবসের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার কথা জানতে পেরে প্রাধ্যক্ষ স্যারকে জানাই। স্যার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ১১ জনকে চিহ্নিত করে থানায় দেন।”

আটকদের মধ্যে অনেকে অভ্যাসবশত ভুল করে পোস্টার ছিঁড়ে থাকতে পারে এমন ধারণার কথা জানিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান ফকির রাসেল।

আটকদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এহসান আহমেদ ইচ্ছাকৃতভাবে পোস্টার ছেঁড়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, “দেয়ালের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় অসাবধানতাবশত একটি পোস্টারে হাত লেগে তা একটু ছিঁড়ে যায়। পরে সকালে প্রভোস্ট আমাদের ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানায় পাঠিয়ে দেয়।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন, তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আটক ছাত্রদের বিরুদ্ধে কী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা জানতে চাইলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে আরও যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে মামলার কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।