ইতিহাসের সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা: কাদের

দেশের ইতিহাসে এবছরই ঈদযাত্রা সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক ছিল বলে দাবি করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2017, 11:04 AM
Updated : 28 June 2017, 11:13 AM

সচিবালয়ে বুধবার ঈদযাত্রা পর্যালোচনা সভা শেষে তিনি বলেন, “এবারের ঈদযাত্রা নিকট অতীতের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক যাত্রা এবং গত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই রাস্তাঘাট সড়ক-মহাসড়ক তুলনামূলক ছিল ভাল। রেলযাত্রাও ছিল ভাল এবং নৌপথেও যাত্রাও ছিল স্বস্তিদায়ক। তিনটি পরিবহনেই স্বস্তিদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করা হয়েছে।”

গত সোমবার সারাদেশে উদযাপিত হয় ঈদুল ফিতর।

এবার ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে মাঝে মধ্যে যানজটের খবর পাওয়া গেলেও তা সহনীয় ছিল বলে শুরু থেকেই বলে আসছিলেন সড়কমন্ত্রী।  

এজন্য আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সুবিধা হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। সঙ্গে প্রশাসনের তৎপরতারও প্রশংসা করেন তিনি।

“ঈদে ঘরমুখো যাত্রার সময় বৃষ্টি-বাদল না থাকায় আমরা আল্লাহর তরফে অনেক ফেবার পেয়েছি। পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয়। মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম, সড়ক ও জনপথের ইঞ্জিনিয়াররা রাস্তায় ছিলেন। আমি তাদের ছুটি বাতিল করেছিলাম। তারা দেশ ও জনগণের স্বার্থে তা হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন।

“ঈদের সময় চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়া এটা কল্পনাও করা যায় না। গতবারের তুলনায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের হারও ছিল অনেক কম।”

এবার ঈদের সময় সড়কে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে রংপুরে ঘটে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি।

ঈদের দুইদিন আগে গত শনিবার রংপুরের পীরগঞ্জের কলাবাড়ি এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে একটি সিমেন্টবোঝাই ট্রাক উলেট ১৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পোশাককর্মী। এ ঘটনায় আহত হন ১১ জন।

রংপুরের দুর্ঘটনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “তারা গরিব মানুষ, অল্প পয়সায় এটায় (ট্রাকে) উঠেছিল। এদের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি তখনই খোঁজ-খবর নিয়েছি। জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছি যাতে লাশ পৌঁছে দেওয়া হয়। কিছু তৎক্ষণিক সাহায্যও তাদেরকে করা হয়।”

তবে ঈদে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর হারও অনেক কম দাবি করেন তিনি।

মানুষের রাজধানীতে ফেরাও নির্বিঘ্ন করতে কর্মকর্তাদের তৎপর থাকার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে আমাদের কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীর ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।ধরে নিতে হবে বৃষ্টি হবে। এটা ভেবেই রাস্তা ব্যবহারযোগ্য রাখতে হবে।”

সম্প্রতি পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক এক মাসের মধ্যে ভারী যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গ

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “আন্দোলন তো আট বছর ধরে শুনছি, আট বছরে আট মিনিটও তাদের রাস্তায় দেখিনি সংঘবদ্ধভাবে।

“এমনকি ৫৯৬ জনের কমিটিকেও কোনোদিন দেখিনি রাস্তায় এসে একটা স্লোগান দিতে, প্রটেস্ট করতে।”

কাদের বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে। সংবিধানে যেটা আছে সেটা হচ্ছে- ইলেকশনটা ইলেকশন কমিশনের অধীনেই হবে। কোনো সরকারের অধীনে হবে না। ইলেকশনের সময় যেসব বিষয়, মন্ত্রণালয় এবং সংস্থা ইলেকশন রিলেটেড, সেগুলো কিন্তু ইলেকশন কমিশনের অধীনেই ন্যস্ত হবে। তখনকার রুটিন দায়িত্ব পালন করবে যে সরকার, সেই সরকারের পলিসি ডিসিশনে কোনো ভূমিকা থাকবে না।”

অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচনের সময় সরকার দায়িত্ব পালন করে, শেখ হাসিনার সরকারও সে দায়িত্ব পালন করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“সরকারের কাজ হবে একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, ক্রেডিবল, ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা, ফেসিলেটেড করা।

“এটাকে বলে সহায়ক সরকার। ফেসিলেটেড মানে হলো সহায়তা করা। তখন যে সরকার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো ক্ষমতায় থাকবে, সেই সরকারের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা। তখন এ সরকারই সহায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করবে।”