শনিবার সকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে ঈদযাত্রা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এক প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আগেকার যে কোনো সময়ের চেয়ে মহাসড়কে যাত্রার মান এবারে ভাল। ভোগান্তি কম। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে চলাচলে চন্দ্রায় যে দীর্ঘ জট লেগে থাকত, গত ১০ বছরের চেয়ে এবার সেটা কম।”
তিনি বলেন, “আজো অনেক জায়গায় রাস্তায় কিছুটা ধীরগতি আছে। এটা অতিরিক্ত চাপের কারণে। আশা করি, জনগণ সেটা মেনে নেবে।”
এর আগে সকাল ১০টায় সেখানে পৌঁছে বিভিন্ন কাউন্টারে গিয়ে যাত্রী ও ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঈদযাত্রার খোঁজখবর নেন মন্ত্রী।
দুর্ভোগ সহনীয় পর্যায়ে আছে দাবি করে কাদের বলেন, “আমি এ কথাটা একবারও বলব না যে, যাত্রীরা পুরোপুরি ভোগান্তিহীন যাত্রা করছে। ঢাকা থেকে ৮০ লাখ মানুষ গ্রামে যাচ্ছে ঈদ করতে। এখানে আমরা বলেছি, দুর্ভোগ সহনীয় পর্যায়ে রাখব। এবং তা আমরা পেরেছি।”
তবে শনিবারের ঈদযাত্রায় টাঙ্গাইলে বিচ্ছিন্ন জট এবং সিরাজগঞ্জে ২১ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনে ধীরগতির কারণে গাড়ি না ফেরায় ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে উত্তরের পথের যাত্রীদের বাসের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে ভোরে রংপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যারা ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছিলেন।
এ দুর্ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের বলেন, “এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এদের ঈদের আনন্দ মাটি হয়ে গেছে। পরিবারগুলো পথে বসে যাবে। এজন্য আমি ড্রাইভারদের আরও সতর্কভাবে গাড়ি চালানোর জন্য বলব। আর যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলব, জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়ে ঈদের আনন্দ একেবারে মাটি হয়ে যেতে পারে।”
যাত্রী সাধারণ ও চালকদের যাত্রাপথে ‘আরও সতর্ক’ হওয়ার আহ্বান জানান কাদের।
অতিরিক্ত ভাড়া ও ট্রিপ না নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “অতিরিক্ত ট্রিপ নেওয়ার জন্য গাড়ি স্পিডে চালানো থেকে বিরত থাকুন। গাড়ি চালনায় আরও সতর্ক হোন।
“মালিকদেরকে আমি বলব, কিছু কিছু জায়গায় অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ শুনেছি। এটা থেকে বিরত থাকুন।”
সেখানেও ঈদযাত্রায় মহাসড়ক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন কাদের বলেন, “ধীরগতিতে গাড়ি চলা আর সড়কে যানজট দুটিকে এক করে দেখা উচিত নয়। চন্দ্রা-নবীনগরে গত ২০ বছরেও এত স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা হয়নি। নির্বিঘ্নে গাড়ি চলাচল করছে।
“কোনাবাড়িতে নির্মাণাধীন ফোর লেনের কারণে যানজট হওয়ার কথা ছিল, সেখানেও যানজট নেই। সারা বাংলাদেশে কম ভোগান্তিতে মোটামোটি স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা উপভোগ করেছি।”
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাভার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম রাজীব দলের সাধারণ সম্পাদক কাদেরের কাছে যেতে চাইলে মন্ত্রী তাকে দেখে বলেন, “তুমি ওইদিকে থাকো, তুমি ক্যান্ডিডেট, ক্যান্ডিডেট আসা যাবে না।
“তুমি ইলেকশনের ক্যান্ডিডেট, তুমি ধারে কাছেও থাইকো না, আমারে ডুবাবা নাকি- আমি নিয়ম মানব।”
এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকা-১৯ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান, সাংবাদিক ও কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকছুদ, তেতুলঝোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমরসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।