নিউ ইয়র্কে গৃহকর্মীকে ‘ঠকানোয়’ জাতিসংঘের বাংলাদেশি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

গৃহকর্মী নির্যাতনে নিউ ইয়র্কে এক বাংলাদেশি কূটনীতিক গ্রেপ্তার হওয়ার পর সপ্তাহ না যেতেই একই ধরনের অভিযোগে সেখানে জাতিসংঘে কর্মরত একজন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 June 2017, 06:53 PM
Updated : 20 June 2017, 09:29 PM

জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি অ্যানালাইসিস ইউনিটের প্রধান হামিদুর রশীদকে মঙ্গলবার সকালে নিউ ইয়র্ক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তার বিরুদ্ধে ভিসা জালিয়াতি, বিদেশি কর্মী নিয়োগ চুক্তিতে জালিয়াতি এবং পরিচয় জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

ম্যানহাটন ফেডারেল কোর্টে মঙ্গলবার বিকালে হামিদুরকে হাজির করার কথা রয়েছে।

হামিদুর রশীদ

এর আগে গত সোমবার নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল শাহেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয় গৃহকর্মীকে নির্যাতন এবং মজুরি চাওয়ায় হত্যার হুমকির অভিযোগে। ৩৬ ঘণ্টা পর ৫০ হাজার ডলার বন্ডে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

হামিদুর রশীদের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য জাতিসংঘে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

হামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সপ্তাহে ৪২০ ডলার মজুরিতে গৃহকর্মী নিয়োগের চুক্তি করে তার ভিসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে চুক্তিপত্র দাখিল করেন। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে গৃহকর্মী যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালে হামিদ নতুন একটি চুক্তিতে তার সই নেন, যেখানে সাপ্তাহিক মজুরি ২৯০ ডলার লেখা হয়।

হামিদুর রশীদ ওই গৃহকর্মীর পাসপোর্ট নিয়ে নেন এবং অন্য কোথাও কাজ করলে তাকে প্রথমে কারাগারে ও পরে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে বিভিন্ন সময় হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলায় বলা হয়েছে, হামিদুর রশীদ প্রথম দিকে ওই গৃহকর্মীর হাতে কোনো টাকা দেননি। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত কাজের জন্য বাংলাদেশে তার স্বামীকে মাসে ৬০০ ডলারের সমপরিমাণ টাকা পাঠান। ওই বছর অক্টোবরে সরাসরি তার হাতে ৬০০ ডলার দেন।

ইউএনডিপির এই বাংলাদেশি কর্মকর্তা কখনোই তার গৃহকর্মী বা তার স্বামীকে মূল চুক্তি অনুযায়ী সপ্তাহে ৪২০ ডলার করে দেননি বলে অভিযোগে বলা হয়।

এছাড়া গৃহকর্মীকে যথাযথ বেতন দিচ্ছেন বলে জাতিসংঘে প্রমাণ দিতে তার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুললেও তা হামিদ ও তার স্ত্রী নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে মামলায় বলা হয়েছে।

ওই গৃহকর্মী ২০১৩ সালেই হামিদের বাসা থেকে চলে যান এবং আর ফেরেননি বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।