খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় মাইনী নদীতে নয়নের মোটরসাইকেলটির অবস্থান শনাক্ত করার পর নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের সহযোগিতায় সেটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার আলী আহমদ।
দীঘিনালার থানার ওসি মো. শামসুদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পিবিআই সদস্যরা চট্গ্রাম ও দীঘিনালা থেকে জুনেল চাকমা (১৭) ও রুনেল চাকমা (৩২) নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করেন।
দীঘিনালা থানায় নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সকালে নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের খবর দেওয়া হয়। তারা এসে বাবুপাড়ায় মাইনী নদীতে তল্লাশি শুরু করেন।
বিকাল ৩টার দিকে ডুবুরিরা মোটরসাইকেলটির অবস্থান শনাক্ত করলে দড়ি দিয়ে বেঁধে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিকাল সোয়া ৪টার দিকে বাহনটি টেনে তোলা হয় বলে জানান ওসি।
রাঙামাটির লংগদু সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালানোর কাজ করতেন। গত ১ জুন খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের চার মাইল (কৃষি গবেষণা এলাকা সংলগ্ন) এলাকায় নয়নের লাশ পাওয়া যায়।
স্থানীয় বাংলাভাষীদের অনেকে নয়ন হত্যার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করে এলেও সেই অভিযোগ তারা অস্বীকার করে।
নয়ন হত্যার তদন্তে নেমে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা শুক্রবার চট্টগ্রাম থেকে জুনেলকে এবং দীঘিনালা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে রুনেলকে গ্রেপ্তার করেন। পরে মাইনী ব্রিজ থেকে ৩০০ গজ দূরে নয়নের হেলমেটও উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে জুনেলের বাড়ি রাঙামাটির লংগদুতে। আর রুনেলের বাড়ি খাগড়াছড়ির বাবুছড়ায়।
পুলিশ বলছে, জুনেলের সঙ্গে বাবুরাজ চাকমা নামের আরেকজন সেদিন লংগদু থেকে খাগড়াছড়ি সদরে আসার জন্য নয়নের মোটরসাইকেল ভাড়া করে। পথে দীঘিনালা বাস স্টেশন থেকে রুনেল তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।
খাগড়াছড়ি সদর থেকে ফেরার সময় চারমাইল এলাকায় নয়নকে মারধর করে মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু বিক্রি করতে না পেরে চারদিন পর মোটরসাইকেলটি মাইনী নদীতে ফেলে দেওয়া হয় বলে পিবিআই কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ব্যক্তিগত বিরোধ বা পূর্ব শত্রুতা থেকে নয়, মোটর সাইকেল ছিনতাইয়ের জন্যই নয়নকে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা পেয়েছেন তারা।