বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন: বিশেষ বিধান বাতিল দাবিতে সমাবেশ

প্রস্তাবিত বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে মেয়েদের বিয়ের বয়স শিথিলের বিধান বাতিলের দাবিতে ঢাকায় সমাবেশ করেছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2017, 03:42 PM
Updated : 18 Jan 2017, 03:42 PM

বুধবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানমের সভাপতিত্বে ওই সমাবেশ হয়। বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৬-এর বিশেষ বিধান বাতিলের দাবিতে প্রস্তাব পাঠ করেন ‘উই ক্যান’ ক্যাম্পেইনের সমন্বয়ক জিনাত আরা হক। 

আয়শা খানম বলেন, “সরকার বিশেষ বিধান রেখে নারীর বিয়ের বয়স ১৮ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আন্তর্জাতিক যে নীতিগুলো, আইনগুলো আছে সেখানে কোনো শর্ত, কোনো বিধান নেই।

“আজ আমরা এখানে এক সুরে কথা বলব- ১৮ এর আগে কোনো বিয়ে নয়। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী একটি শক্তি আজ দেশ পরিচালনা করছেন। কাজেই তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা তারা কখনোই এমন সিদ্ধান্ত নেবেন না, যা নারীর জন্য হুমকি স্বরূপ।”

গত ৮ ডিসেম্বর ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৬’ বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়।

প্রস্তাবিত এই আইনের ১৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, “বিশেষ প্রেক্ষাপটে সর্বোত্তম স্বার্থে আদালতের নির্দেশে এবং মা-বাবার সম্মতিতে যে কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েশিশুর বিয়ে হতে পারবে।”

এই বিশেষ বিধান রেখে বিলটি জাতীয় সংসদে পাস হলে তা শিশু অধিকার আইন ও আন্তর্জাতিক সনদের সঙ্গে ‘সাংঘর্ষিক’ হবে বলে অভিযোগ করেন সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির নেতারা।

জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদ ও বাংলাদেশের শিশু আইনে বয়স ১৮ বছরের কম হলে তাকে শিশু বলা হয়েছে।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী, ব্র্যাকের পরিচালক আন্না মিনজ্, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, অ্যাকশন এইডের আবাসিক প্রতিনিধি ফারাহ কবীর, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশি কবিরসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

১৮ বছরের নিচে একটি মেয়েকে বিয়ে দিলে তিনি কর্মজীবন গড়ে তোলার কোনো সুযোগ পাবেন না এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে এর প্রভাব পড়বে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।

পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধিসহ অপরিণত গর্ভধারণ, ফিস্টুলা, মাতৃ মৃত্যুর ঝুঁকি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ঝরে পড়ার হার ও প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়বে বলেও শঙ্কার কথা বলেন বক্তারা।