যৌন নিপীড়ন: আহসানউল্লাহর শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরেক অভিযোগপত্র গ্রহণ

ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন ও তার ছবি ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে বেসরকারি আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহফুজুর রশীদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দেওয়া একটি অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছে সাইবার ট্রাইব্যুনাল।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2016, 05:47 PM
Updated : 25 Oct 2016, 05:47 PM

বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম সামছুল আলম মঙ্গলবার এ অভিযোগপত্র গ্রহণ করে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন ঠিক করেন।

এদিন কারাগার থেকে শিক্ষক ফেরদৌসকে আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে গত ১৪ অগাস্ট তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে আলাদা দুইটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক আফরোজা আইরিন কলি।

এদিকে সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলেও একই ঘটনায় ঢাকার ২ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসামিকে হাজির না করায় যৌন হয়রানির বিষয়ে দেওয়া অভিযোগপত্রের ওপর অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে যায়।

যৌন হয়রানি বিষয়ে শিক্ষক ফেরদৌসের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্র গত ৬ সেপ্টেম্বর আমলে নেওয়া হলেও অভিযোগ গঠনের শুনানি এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো পিছিয়ে গেল।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শফিউল আজম আগামী ২৭ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের জন্য নতুন ঠিক করেন।

ট্রাইব্যুনালের পেশকার আমজাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ওই শিক্ষককে মঙ্গলবার অজ্ঞাত কারণে ট্রাইব্যুনালে হাজির না করায় বিচারক লাল কালি দিয়ে হাজিরার পরোয়ানা লিখে কারাগারে পাঠান।

তড়িৎ কৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফেরদৌস আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ৩০ এপ্রিল তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এরপর ৪ মে প্রথম প্রহরে কলাবাগান থানায় যৌন হয়রানির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদদৌল্লাহ আল সায়েম।

মামলার পর ওইদিন ভোরেই রমনা এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে শিক্ষক ফেরদৌসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরে দুই দিনের রিমান্ড শেষে তিনি যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দেন।

এছাড়া ৫ মে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে জবানবন্দি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রী।

তথ্য-প্রযুক্তি আইনে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, শিক্ষক ফেরদৌস বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি এবং প্রশ্নপত্র ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এক ছাত্রীর সরলতার সুযোগে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা এবং তার নগ্ন ছবি ওয়েবসাইট ও মোবাইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

অভিযোগপত্রে যৌন হয়রানির শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই পাঁচছাত্রীসহ মোট ২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।