পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায়

অনিয়ম এড়াতে শিক্ষক নিয়োগে মৌখিকের সঙ্গে লিখিত পরীক্ষাও নিতে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2016, 11:50 AM
Updated : 21 Sept 2016, 11:50 AM

এছাড়া সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ‘অপরাধীদের’ নিয়োগ ঠেকাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগে ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থেকে পাওয়া গোপনীয় গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) এসব নির্দেশনা দিয়েছে, যা বুধবার প্রকাশ পেয়েছে।

বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, এর ৩৭টিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। সরকারি-বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয় দেখভালের দায়িত্ব ইউজিসির।

ইউজিসি সচিবকে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, “ইদানিং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ অনভিপ্রেত অবস্থার সমাধানকল্পে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থেকে পাওয়া গোয়েন্দা বিভাগের গোপনীয় প্রতিবেদনে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ‌্যে দুটি সুপারিশ করা হয়েছে।”

# শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগে শুধু মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়, এতে অনিয়মের সুযোগ তৈরি হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষার পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রার্থীর মেধা যাচাই করা সহজ হবে এবং অনিয়মের সুযোগ হ্রাস পাবে।

# পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগের পূর্বে কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন বা গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক ব্যক্তিগত তথ্যাদি যাচাই হয় না। ফলে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তি বা অপরাধীরা নিয়োগের সুযোগ পায়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের আগে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে নিয়োগ করা যাবে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এসব নির্দেশনা অনুসরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে তা মন্ত্রণালয়কে জানাতে ইউজিসিকে অনুরোধ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মো. হেলাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ইউজিসিকে বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন এটা ইনডোর্স করে।

“যেহেতু ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেখাশোনা করে … এজন্য ইউজিসিকে বলেছি। এটা সরকারের ইচ্ছা, সরকার এটা ইউজিসির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে চায়।”

এটা সরকারের আদেশ কি না- এ প্রশ্নে অতিরিক্ত সচিব বলেন, “এটাকে আদেশ, নির্দেশনা নাকি অনুরোধ বলব, সেটা বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হলো এটা এখন সময়ের দাবি এবং প্রত‌্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়কে এটা করার জন্য অনুরোধ করেছি, তারা যেন এটা করে। তবে এটার মধ্যে ফোর্স আছে।”

এর আগে বিশ্ববিদ‌্যালয়গুলোতে এইচএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির সুপারিশ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে বিশ্ববিদ‌্যালয়গুলো তা আমলে নেয়নি।

বিশ্ববিদ‌্যালয়গুলো স্বায়ত্তশাসিত হলেও সরকার অর্থ দেয় বলে নির্দেশনাও দিতে পারে বলে মন্তব‌্য করেন অতিরিক্ত সচিব হেলাল।  

“প্র্যাকটিসটা এ রকম নাই দেখে আমরা সরাসরি বলি না যে অমুকটা করেন, তমুকটা করেন। এজন্য ইউজিসির মাধ্যমে বলি এবং খুব কম সময়েই সরাসরি কোনো কথা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা বলি।”