মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশ তৈরি এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কাজ করা নিউ ইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠনটি আশঙ্কা করছে, এই আইনটি সরকার তার সমালোচনার পথ বন্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
গত ২২ অগাস্ট মন্ত্রিসভা বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছর জেল এবং এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রেখে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’র খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করে।
সিপিজের ওয়েবসাইটে বুধবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই আইনের বিষয়ে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদী প্রচার দমন কিংবা স্থিতিশীলতা রক্ষার উদ্দেশ্যের কথা বলা হলেও এই আইনটি কর্তৃপক্ষের সমালোচনা কিংবা যা তাদের জন্য বিব্রতকর, তা বন্ধের সুযোগ তৈরি করবে।
সংগঠনটি মনে করছে, অনলাইন কনটেন্টের বিষয়ে দণ্ডবিধি প্রয়োগ অনলাইন সাংবাদিকতার সাধারণ চর্চাকেও অপরাধ হিসেবে বিচারের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সিপিজের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি শন ক্রিসপিনকে উদ্ধৃত করে বিবৃতিতে বলা হয়, “যদি এই আইনটি পাস হয়, তা বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর প্রভাব ফেলবে।
“প্রস্তাবিত আইনে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে নির্দোষ সমালোচনাও সাইবার ক্রাইম হিসেবে ধরে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করেছে। আমরা পার্লামেন্টের কাছে জোরাল আহ্বান জানাব, তারা যেন এই আইনটি পাস না করেন। সেই সঙ্গে মুক্ত সাংবাদিকতা এবং মত প্রকাশের সুযোগের অন্তরায় হয়, এমন কোনো আইন ভবিষ্যতে যেন না হয়, তা তারা নিশ্চিত করবেন।”
বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের মৃত্যুর গুজব নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশের পর ইন্টারনেট সংবাদপত্র বাংলামেইলের তিন সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।
প্রস্তাব্তি ডিজিটাল আইনে মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালালে বা তাতে মদদ দিলেও শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
অনুমতি ছাড়া ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ কারও ব্যক্তিগত ছবি তোলা, প্রকাশ বা বিকৃতি ঘটালে ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের’ অপরাধে সাজার বিধানও রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।
এর আগে প্রণীত তথ্য প্রযুক্তি আইনের বিধানগুলো যুক্ত করে এই আইনটি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি আইনটি নিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের কড়া সমালোচনা রয়েছে।