শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গাটি চাইলেও এই হলটি পাচ্ছে বুড়িগঙ্গার ওপারে কেরানীগঞ্জে।
কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়ার পর গত সাত বছর ধরে হলের দাবি জানিয়ে এলেও তা পায়নি পুরান ঢাকার এই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কেরানীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ছাত্রদের জন্য ১০ তলা একটি আবাসিক হল নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হলেও তাতে গতি আসছিল না।
এর মধ্যে নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেওয়ার পর ওই স্থানটি হলের জন্য চেয়ে ধর্মঘট ডেকে রাজপথে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষও হয় গত কয়েকদিনে। বুধবার রাজপথে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যেই সচিবালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
ওই বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ১০ তলা ওই হল নির্মাণে প্রকল্পটি এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানান বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক মীজানুর।
তিনি বিকালে তার বাড়িতে সাংবাদিকদের বলেন, “পৌণে ৩০০ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পটি দ্বিতীয়বার সংশোধিত হয়ে এখন একনেকে অনুমোদনের জন্য যাচ্ছে। এ প্রকল্পটি আগে ১২৬ কোটি টাকার ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তা সংশোধন করে বাজেট বাড়ানো হয়েছে।
“প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে শিক্ষামন্ত্রীকে অতিদ্রুত প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের জন্য তুলতে নির্দেশ দিয়েছেন।
একনেকে অনুমোদন হলে দ্রুত এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা যাবে।”
প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবন ভেঙে ২০ তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবন তৈরির ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এছাড়া ১০ তলাবিশিষ্ট হল নির্মাণে ৬৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
অধ্যাপক মীজানুর বলেন, “প্রায় ২৫ বিঘা জমি ক্রয় করেছি আমরা কেরানীগঞ্জে। উঁচু নিচু জায়াগার ভূমি উন্নয়নে ৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওখানে পুকুর থাকতে হবে, সেজন্য ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।”
১০ তলার ভিত নিয়ে প্রাথমিকভাবে হলটি ৫ তলা এবং ২০ তলার ভিত নিয়ে একাডেমিক ভবন ১০ তলা হওয়ার কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী তা পূর্ণাঙ্গ করে তুলতে বলেছেন বলে জানান তিনি।
“প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কাজ বাকি রাখা যাবে না; সম্পূর্ণ করতে হবে। সেজন্য এখন হল হবে ১০ তলা, আর একাডেমিক ভবন হবে ২০ তলা। আর এজন্য টাকাও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে প্রকল্পের।”
কারাগারের পরিত্যক্ত জমিটির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন করলেও তাতে সরকারের সাড়া এখনও মেলেনি।
জগন্নাথের নির্মাণাধীন বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ছাত্রী হল এবং নতুন একাডেমিক ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ নিয়ে দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রী হলের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “ওই জায়গাটি ছিল দখল করা, দুবার সরকারি দলের অফিস ভেঙে কাজ শুরু করতে হয়েছে। ইতোমধ্যে সাড়ে ৮ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বরের দিকে হলটির ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হবে। তখন দ্রুত কাজ শেষ করা যাবে।”
একাডেমিক ভবন উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের নকশা খুঁজে বের করতে সময় লাগায় দেরি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পূর্বাচল প্রকল্পে ৫০ একর জায়গা পেতে ১৫ লাখ টাকা জামানত দিয়েছে বলে জানান তিনি।