পদোন্নতি-বাসনা থেকে গবেষণা নয়: ইমামুল হক

শিক্ষকদের গবেষণার পেছনে পদোন্নতির বাসনা থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম ইমামুল হক।

নিজ্স্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2016, 03:30 PM
Updated : 29 July 2016, 03:30 PM

তিনি বলেছেন, “পদোন্নতির জন্য গবেষণা নিবন্ধ জমা দেওয়ার দরকার হয়। এ কারণে কোনোমতে একটি নিবন্ধ ছাপিয়ে সেটা জমা দেওয়ার চেষ্টা কেউ কেউ করে থাকেন। তবে সবাই করেন না। শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন জ্ঞান তৈরি না করে কেবল পদোন্নতির জন্য এটা করা উচিত নয়।”

শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে একথা বলেন তিনি।

এরই মধ্যে শিক্ষকতা ও গবেষণায় ৪২ বছর পূর্ণ করেছেন অধ্যাপক ইমামুল; এ উপলক্ষে শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে তার অধীনে গবেষণাকারী একদল শিক্ষার্থী এক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এ অধ্যাপকের প্রায় ৩০০টি প্রকাশনা নিয়ে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হবে বলে আয়োজকরা জানান।

‘বাংলাদেশে গবেষণার ক্ষেত্রে অর্থের অভাবটি প্রধান হয়ে দেখা দেয়’ মন্তব্য করে অধ্যাপক ইমামুল বলেন, “গবেষণার জন্য প্রথমই দরকার পড়ে অর্থের। তার মানে এই না যে, সব গবেষণায় অনেক অর্থ লাগে। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণায় বরাদ্দ একেবারে কম।”

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “সেখানে বাজেটের বরাদ্দ ১০ লাখ টাকা আর ইউজিসি থেকে গবেষণা বরাদ্দ পাওয়া যায় ১৫ লাখ টাকা। এই দিয়ে অনেক কিছুই করা সম্ভব হয় না।”

মৌলিক গবেষণা কম হওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক ইমামুল বলেন, “মৌলিক গবেষণার চেয়ে প্রায়োগিক গবেষণা এখন বেশি হচ্ছে। কারণ প্রায়োগিক গবেষণার বেশি গুরুত্ব পায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে প্রায়োগিক দিকটাই চাওয়া হয় বেশি। আবার প্রায়োগিক গবেষণার ক্ষেত্রটাও বড় ও বিস্তৃত।”

২০১৫ সালের ২৮ মে থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ইমামুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরে যান ওই বছরের ৩০ জুন।

পানি থেকে খাদ্যচক্রে আর্সেনিক ছড়ানো নিয়ে বড় পরিসরে গবেষণা করেছেন ইমামুল হক। এর আগে সায়েন্সল্যাব খ্যাত বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৩ সালের নভেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসাবে যোগ দেওয়া অধ্যাপক ইমাম ডক্টর অব ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নেন ফ্রান্সের ন্যান্সি আই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

শিক্ষা ও গবেষণায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি স্বর্ণপদক, ইউজিসি অ্যাওয়ার্ড, বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পদক, বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের দেওয়া ‘সয়েল সায়েন্টিস্ট অব দি ইয়ার ২০১০’ প্রভৃতি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।