সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য নেটওয়ার্ক ‘রমজান মাসে রকমারি ইফতারি, নিরাপদ খাদ্যর আলোকে আলোচনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি জাহিদুর রহমান বলেন, “সমস্যার মূলে কী রয়েছে- তা বিবেচনা না করে শুধু মোবাইল কোর্ট চালিয়ে ভোক্তার ‘আই ওয়াশ’ করা হচ্ছে। আমাদের দেখার বিষয় খাদ্য নিরাপত্তা দিচ্ছেন কি না; ইফতারি ফেলে দিলেই এর সমাধান হবে না।”
খাদ্য ভেজাল দেওয়ার মাধ্যমে মানবতার অবক্ষয় হচ্ছে মন্তব্য করে কৃষি গবেষক ড. মো. আব্দুল মমিন ইফতারের বিভিন্ন পদে ক্ষতিকর উপাদান থাকার কথা বলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, “ইফতারে যে বেগুনি আমরা খাই, সে বেগুনে থাকে প্রচণ্ড রকমের বিষ। রাসায়নিক মেশানো চাল দিয়ে মুড়ি, এন্টিবায়োটিক মেশানো মুরগির মাংস, খেজুরেও রয়েছে নানা ধরনের ক্যামিকেল।
“এসব ইফতার আইটেমের বেশিরভাগই ক্যান্সার, কিডনি রোগসহ অন্যান্য রোগের জন্য দায়ী। তাই বাসায় তৈরি ইফতারি ছাড়া নিরাপদ ইফতার সম্ভব নয়।”
কনজুমারর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া ইফতারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ফলে বিষ প্রয়োগের পাশাপাশি ‘ভালো হোটেলের পেছনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ’ থাকার অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “ইফতারে ব্যবহৃত নানা ধরনের ফল ও আনারসে সরাসরি বিষ প্রয়োগ করে বিক্রি করা হচ্ছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ‘হালাল সার্টিফিকেশন’ ট্যাক্স অফিসার আবু সাদেক পটোয়ারী বেশিরভাগ ইফতারিই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে মন্তব্য করে বলেন, “হালাল মানে ইসলামী কোনো বিষয় নয়। এর আসল অর্থ হল ‘হাইজেনিক’ বা স্বাস্থ্যকর। হালাল বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলে খাদ্য ভেজাল অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে।”
ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান ইফতারির বিষয়ে বিক্রেতাদের পাশাপাশি রোজদারদেরও সচেতন হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকারের নজরদারি আরও বাড়ানোর দাবি জানান।
“বিশেষ করে নিরাপদ খাদ্য আইন, ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন এবং প্রতিযোগিতা আইনগুলো প্রয়োগে সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। এইসব আইন কার্যকরী করতে ব্যবস্থা নিতে হবে,” বলেন তিনি।
উবিনীগ-এর নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য নেটওয়ার্ক এর সভাপতি ফরিদা আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘বি-সেফ’-এর ভাইস চেয়ারম্যান সহিদুল হক খান ও ড. এস এম সোবহান।