বিদেশি অর্থ পাওয়ার মনোভাব ত্যাগ করুন: পরিবেশমন্ত্রী

বিদেশি অর্থের অপেক্ষা না করে নিজেদের সামর্থের মধ্যে উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2016, 06:02 PM
Updated : 31 May 2016, 06:02 PM

মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, “আমাদের বন সম্পদ আগের তুলনায় কমেনি, বরং বেড়েছে। বাংলাদেশে কোনো মরুকরণ আমি দেখি নাই। তবুও আমরা যখন দেখি, এক্ষেত্রে বাইরের দেশ থেকে আসছে তখন বিদেশিদের আনুকূল্য, সহানুভূতি ও দয়া পাওয়ার চেষ্টা করি।”

“আমি বিদেশি সাহায্যের বিরুদ্ধে বলছি না। তাদের কাছ থেকে অর্থ, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আমরা নিতে পারি। একই সঙ্গে আমাদের মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে। আমরা যেকোনো কিছু করতে পারি। সেটা বিদেশি সাহায্য আসুক বা না আসুক।”

জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থার (এফএও) অর্থায়নে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা (ইউএসএআইডি) কারিগরি সহায়তায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (সিআইপি) নিয়ে জাতীয় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তার এসব মন্তব্য আসে।

মন্ত্রী মঞ্জু বলেন, “এটাই আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব। যখনই আমি তার সঙ্গে কথা বলি আমি অতিরিক্ত শক্তি পাই। তিনি বলেন, ‘সামনে এগোন, আপনার কত টাকা দরকার?”

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “বলা হয় থাকে, আমরা যদি কার্যকর উদ্যোগ না নিই তাহলে ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা অনেক বাড়বে। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে তাতে যে প্রাধান্য দেওয়া দরকার তা দেওয়া হয় না। আমাদের জীবন, ইস্যু ও সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে বরাদ্দের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।”

“আমি যখন আমার কলিগদের দরজায় এ বিষয়ে করাঘাত করি, তাদের মধ্যে একজন মন্ত্রিসভায় অনেক জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি; তিনি বলেন, ‘আমি ভাবি টাকা আসবে বাইরে থেকে’। আমি উত্তর দিই, ‘আমি যাচ্ছি মাটির নিচে, আপনি বলছেন অন্য একজন এসে আমাকে উদ্ধার করবে।’ এই মানসিকতা আমাদের পরিবর্তন করা দরকার।” 

সিআইপি বাস্তবায়নের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী।

পরিবেশ, বনায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ওই কান্ট্রির ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানের (সিআইপি) বিস্তারিত তুলে ধরে এর জাতীয় পরামর্শক শাহ মোহাম্মদ মাহবুব বলেন, “সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফাণ্ডের উপর ভিত্তি করে আমরা এই পরিকল্পনা করেছি। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, দূষণ মোকাবেলা, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত সুশাসনের ক্ষেত্রে আমাদের বরাদ্দ রয়েছে।”

“কিন্তু বরাদ্দের ক্ষেত্রে কিছু ঘাটতি আছে। সেই ঘাটতিগুলো সিআইপিতে দেখানো হয়েছে। ঘাটতি মেটানোর বরাদ্দ দেওয়া হলে অর্থ খরচ আরও ফলপ্রসু হবে।”

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী, ইউএসএআইডি এর বাংলাদেশ পরিচালক জেনিনা জেরুজেলস্কি, এফএও এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মাইক রবসন, সিআইপি এর প্রধান কারিগরি উপদেষ্টা মার্কো বোসকোলো বক্তব্য দেন।