বিচারক নিয়োগে দিক-নির্দেশনা: অ্যামিচি কিউরির বক্তব্য শুরু

সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগের দিক-নির্দেশনা (গাইডলাইন) তৈরি প্রশ্নে রুলের শুনানিতে মতামত উপস্থাপন শুরু করেছেন অ্যামিচি কিউরি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2016, 06:22 PM
Updated : 26 May 2016, 06:22 PM

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাই কোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার অ্যামিকাস কিউরিয়া হিসেবে (আদালতের আইনি ব্যাখ্যা ও সহায়তাকারী) জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন।

এ দিন শুনানি নিয়ে আদালত ৫ জুন শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছে।

বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যক্তি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দিক-নির্দেশনা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় বছর আগের রুলের ওপর হাই কোর্টে শুনানি চলছে।

গত এপ্রিলে এই শুনানি শুরু হয়। গত ১২ মে চতুর্থ দিনের শুনানিতে আদালত অ্যামিচি কিউরির মতামত উপস্থাপনের জন্য ১৮ ও ১৯ মে দিন রাখে। সেদিন বিষয়টি অবগত না হওয়ায় অ্যামিচি কিউরি হিসেবে থাকা আইনজীবীদের অবগত করতে পুনরায় নোটিস দিতে বলে আদালত।

পরদিন এক অ্যামিকাস কিউরিয়া সময়ের আবেদন জানালে আদালত ২৬ মে শুনানির জন্য রাখে। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।   

এই মামলায় অ্যামিচি কিউরি হিসেবে রয়েছেন সাতজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। তারা হলেন- ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আজমালুল হোসেন কিউসি, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও এ এফ হাসান আরিফ।

বৃহস্পতিবার আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজীম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

পরে ব্যারিস্টার আজীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘ষষ্ঠ দিনের শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হাসান আরিফ মতামত উপস্থাপন শুরু করেন। ৫ জুন তিনি আবার বক্তব্য রাখবেন। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ড. কামাল হোসেন ওইদিন মতামত দিতে পারেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন।”  

বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যক্তি বাছাইয়ে দিক-নির্দেশনা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী ২০১০ সালের ৩০ মে হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করেন।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৬ জুন বিচারপতি মো. ইমান আলী (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ রুল দেয়।

রুলে সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে বাছাই প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা’ আনতে কেন সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা তৈরি করা হবে না এবং নিয়োগের নির্দেশনা প্রণয়ন করে তা কেন গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

আইন সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে নিয়োগের জন্য বিচারক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ইতোপূর্বে কী প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে, তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে আইন সচিবকে বলা হয়।

রিট আবেদনকারীর আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রুল হওয়ার পর ২০১৪ সালে বিষয়টি বিচারপতি মির্জা হোসাইন হায়দার (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাই কোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠেছিল।এ বিষয়ে মতামত দিতে আদালত অ্যামিচি কিউরি হিসেবে সাতজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর নাম ঘোষণা করে।

এই বেঞ্চ পুর্নগঠন হওয়ার পর প্রধান বিচারপতি বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে পাঠান।

এরপর রুলের ওপর এপ্রিল মাসে দুইদিন এবং মে মাসে তিনদিন শুনানি হয় বলে জানান ব্যারিস্টার আজীম।