সেলিম ওসমানের অভিশংসন দাবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের

স্কুল শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করিয়ে সমালোচিত নারায়ণগঞ্জের সাংসদ সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে অভিশংসন প্রস্তাব আনার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2016, 10:47 AM
Updated : 19 May 2016, 10:47 AM

শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ এবং ওই ঘটনার বিচার দাবিতে বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে এক মানববন্ধনে তারা জাতীয় পার্টির এই সাংসদের বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব তোলারও দাবি জানান।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ব্যানারে মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন। একই দাবিতে দেশের ৩৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ১১টা থেকে এক ঘণ্টা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক এ এসএম মাকসুদ কামাল বলেন, “কিছুদিন আগে আমরা দাঁড়িয়েছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যার প্রতিবাদে। শ্যামল কান্তিকে যে অপমান, অসম্মান করা হয়েছে, তার প্রতিবাদে ছাত্র-শিক্ষকরা জেগে উঠেছে।

সাংসদ সেলিম ওসমানের সমালোচনা করেন তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টির এমপি তিনি সেখানে যেয়ে শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করান, …আপনি প্রমাণ করেছেন আপনি অকর্মণ্য, প্রমাণ করছেন আপনি অসভ্য, বর্বর। সাংসদ হিসেবে থাকার অধিকার আপনার নেই। আপনি সরে দাঁড়ান। নইলে আমাদের শিক্ষকরা জানে আপনাকে কিভাবে সরাতে হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ কামাল বলেন, “আমরা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করছি, শিক্ষককে অপমান করার জন্য সংসদ অধিবেশনে তার বিরুদ্ধে নিন্দা এবং অভিশংসনের প্রস্তাব আনা হোক। একইসঙ্গে সেলিম ওসমানসহ ঘটনায় জড়িতে গ্রেপ্তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপার্চায (শিক্ষা) নাসরীন আহমদ বলেন, “শিক্ষককে অপমান করা অত্যন্ত দুঃখের, লজ্জাজনক। সেই সঙ্গে এটা আমাদের জন্য ক্ষোভেরও। সাংসদ আইন প্রণয়ণ করেন, জাতিকে নির্দেশনা দেন। কিন্তু সেই সাংসদকে আজ দেখলাম মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষককে লাঞ্ছনা করলেন।”

তিনি বলেন, “এই আইনপ্রণেতা নির্দেশ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, এখন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা যায়। এই নায়ারণগঞ্জে সাতটি খুন করে শীতলক্ষ্যার জলে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়, কথাগুলো শুনেছি। একই পরিবারে সদস্য হয়ে তিনি শিক্ষকের আত্মমর্যাদাকে হত্যা করেছেন।এরকম সাংসদ দেশের জন্য কি সত্যি প্রয়োজন?”

ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “সেলিম ওসমান সাংসদ হিসেবে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে, তাই সংসদ থেকে তাকে অভিসংশন করা হোক।”

জাতীয় পার্টি থেকেও তাকে বহিষ্কারের দাবি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলদলের শিক্ষকদের আহ্বায়ক নাজমা শাহীন বলেনে, “আমরা মর্মাহত, লজ্জিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর শিক্ষকদের পক্ষ থেকে শ্যামল কান্তি ভক্তের কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাচ্ছি। এ অপমান শুধু তার অপমান নয়, এ অপমান সারাদেশের, সমস্ত শিক্ষক সমাজের।”

অধ্যাপক অসীম কুমার সরকার বলেন, অপকৌশল হিসেবে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে তাকে হেনস্তা ও অপমান করা হয়েছে। কালকে আমরা বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আসবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নাই।”

এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতেদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।