৪০ লাখ ভাড়াটিয়ার তথ্য পেয়েছে ডিএমপি

অপরাধ দমনের অংশ হিসেবে কাজ শুরু করে কয়েক মাসে রাজধানীর ৪০ লাখ ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া জানিয়েছেন। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2016, 11:32 AM
Updated : 4 May 2016, 11:32 AM

এসব তথ্য যাচাই চলছে জানিয়ে তিনি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যেখানে গরমিল পাওয়া যাবে, সেখানে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ঢাকার বিভিন্ন বাড়িতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আস্তানা ও বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়ার পর গত বছরের নভেম্বরে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের এই কাজ শুরু করে মহানগর পুলিশ।

১৫ মার্চের মধ্যে কাজ শেষের পরিকল্পনা থাকলেও এই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আবেদন হওয়ায় অনেকে তথ্য দিতে নিরুৎসাহিত হন। তবে ওই রিট আবেদন খারিজ হওয়ায় পুলিশের এই তথ্য সংগ্রহে বাধা আর আসেনি।

এই ফরম পূরণ করতে বলা হচ্ছে ঢাকার ভাড়াটিয়াদের

বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, “অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, ইতোমধ্যে ৪০ লক্ষ ভাড়াটিয়াদের তথ্য ফরম কিন্তু কালেকশন করে ফেলেছি।

“সেগুলোর মধ্যে যেগুলোকে সন্দেহ হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন মহল্লায় যাচ্ছি। যেগুলো সন্দেহ হবে, গরমিল পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

প্রয়োজনে ওই সব ভাড়াটিয়ার এলাকার ঠিকানায় তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই করা হবে বলেও জানান তিনি।

যারা এখনও ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম নেননি, তাদের তা নিয়ে পূরণ করে দিতে অনুরোধ জানান পুলিশ কমিশনার।

এর গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “এতে অপরাধ হওয়ার আগেই অনেক অপরাধ প্রতিরোধ সম্ভব হবে। এরপরও অপরাধ হলে অপরাধীকে উদঘাটন করতে পারব, দায়ী ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারব।”

কাউকে ঘর ভাড়া দেওয়ার আগে জেনে-বুঝে, জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে, ছবি রাখতে রাজধানীর বাড়িওয়ালাদের পরামর্শ দেন আছাদুজ্জামান।

নতুন ভাড়াটিয়া এলে তা থানায় দেওয়া তথ্য ফোরামে হালনাগাদ করার আহ্বানও জানান তিনি।

পুলিশ কমিশনার বলেন, “আরেকটি অনুরোধ করতে চাই, বাসা ভাড়া দেওয়ার সময় তার প্রফেশন কী, কী করে, কী কী আসবাবপত্র নিয়ে আসছে, তার গতিবিধি কেমন, তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।”

এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “ইদানিং সন্ত্রাসী, জঙ্গিরা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ঘটাচ্ছে, তারা সাময়িক সময়ের জন্য বাসা ভাড়া নিচ্ছে। তারা আসে সাধারণত ছাত্র ও ছোট ব্যবসায়ী পরিচয়ে। তাদের তেমন মাল সামান থাকে না।”

অপরাধ ঠেকাতে প্রত্যেকটি মহল্লায়, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, পেশাজীবী, রাজনীতিবিদ ও পুলিশের সমন্বয়ে ‘সার্ভিলেন্স টিম’ গঠনের উদ্যোগ ডিএমপি নিয়েছে।

“এই কাজ অলরেডি সাত দিন আগে থেকে শুরু হয়েছে। তাদের কাজ হবে সেই এলাকায় কারা আসা-যাওয়া করে, তাদের চালচলন কেমন, তাদের মুভমেন্ট কেমন, কেউ কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত কি না, কারও আচরণ সন্দেহজনক কি না ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে সেই তথ্য পুলিশকে দেওয়া।”