আন্দোলনের নামে খুনিরাই গুপ্তহত্যায়: প্রধানমন্ত্রী

সাম্প্রতিক ‘গুপ্তহত্যাগুলোর’ নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা এর আগে ‘আন্দোলনের নামে’ মানুষ হত্যা করেছে, তারাই এসব ঘটনার পেছনে। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2016, 10:26 AM
Updated : 27 April 2016, 12:23 PM

সরকার এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ‘দেখতে চায় না’ মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীদের ধরতে পারবে বলে তিনি আশা করছেন।

দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকা ও রাজশাহীতে একই কায়দায় এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, এক সমকামী অধিকার কর্মী ও তার বন্ধু এক নাট্যকর্মী খুন হওয়ার পর বুধবার নিজের কার্যালয়ে ‘ফার্স্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটির’ চতুর্থ সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সভাশেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।

গত শনিবার সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে তার বাসার কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এরপর সোমবার বিকালে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় পার্সেল দেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে খুন করা হয় ইউএসএআইডি কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু লোকনাট্য দলের মাহবুব রাব্বী তনয়কে।

প্রেস সচিব বলেন, “সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সুপরিকল্পিতভাবে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে। টার্গেট হচ্ছেন মসজিদের ইমাম, পুরোহিত, পাদ্রী।...উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা।”

যারা উন্নয়ন ‘চায় না’ তারাই এসব ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের ধরা হবে বলে তিনি আশা করছেন।

প্রেস সচিব বলেন, “সব হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা চাই না- বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটুক’।” 

“তিনি বলেছেন, আন্দোলনের নামে যারা প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করেছে- তারাই এসব কাজে লিপ্ত।”

কলাবাগানের ওই হত্যাকাণ্ডের পর পাঁচ থেকে সাতজনকে ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যেতে দেখার কথা বলেছেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী।

আর ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, চলে যাওয়ার সময় খুনীদের একজনকে এক পুলিশ সদস্য ধরে ফেললেও তাকে কুপিয়ে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ সে সময় গুলি করে তাদের থামাতে চাইলেও আসরের নামাজের পর মসজিদফেরত মানুষের ভিড়ে তা আর সম্ভব হয়নি।

প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী ‘ধর্মের নামে’ মানুষ হত্যারও সমালোচনা করেছেন। 

“তিনি বলেছেন, ইসলাম ধর্মের নাম করে আছর, মাগরিব নামাজ না পড়ে, যে সময় মানুষ নামাজ পড়ে, সে সময় তারা মানুষ খুন করতে যায়।”

জঙ্গিদের কোনও ‘ধর্ম ও সীমানা’ নেই বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।  

ক্যালিফোর্নিয়ায় এক বাড়িতে সোমবার বাংলাদেশি এক দম্পতির গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই হত্যার বিচার করবে বলে তিনি আশা করছেন।

সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়োতে গুলি করে এক পরিবারের আট সদস্যকে হত্যারও নিন্দা জানান বলে তার প্রেস সচিব জানান।