‘জীববৈচিত্র্য’ আইন ভাঙলে ৫ বছর জেল

বাংলাদেশের ‘জীববৈচিত্র্য’ রক্ষায় সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে আইন করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2015, 09:24 AM
Updated : 23 Nov 2015, 01:29 PM

নীতিগত অনুমোদনের প্রায় আড়াই বছর পর সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন-২০১৫’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, ২০১৩ সালের ১০ জুন এ আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা।

“অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এটা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পেশ করা হয়। বিস্তারিত আলোচনার পর এটাতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।”

এতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশের কোনো ‘জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ’ এর বিষয়ে তথ্য বা জ্ঞান সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা বা বাণিজ্যিক ব্যবহার করতে পারবে না। এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে বিদেশি নাগরিক বা অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে।    

এ আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড, অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। ২০১৩ সালে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপিত খসড়াতেও একই সাজার কথা বলা হয়েছিল।

জীববৈচিত্র্য বা এ সম্পর্কিত জ্ঞান ব্যবহারের অনুমতি দিতে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হবে। আর কমিটির কাজগুলো তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ভাগ করে দেওয়া হবে বলে শফিউল আলম জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সনদে স্বাক্ষরকারী এবং অংশীদার। বিপুল জনসংখ্যার এই দেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার স্বার্থেই জীববৈচিত্র্য রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।

“আমাদের সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এখানে আমাদের বাধ্যবাধকতা আছে। তাছাড়া এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ ‘কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভার্সিটি’তে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষর করেছে। এ হিসেবেও আমাদের দায়বদ্ধতা আছে।”

নতুন এ আইনের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মঈন উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশে অনাবাসী নাগরিক বা বিদেশি কেউ এবং বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে নিবন্ধিত নয়- এমন প্রতিষ্ঠানের জন্য আইনে বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়েছে।

“এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ দেশের উদ্ভিদ ও প্রাণী নিয়ে আইনে উল্লেখিত কাজগুলো করতে পারবে না। বাংলাদেশের অন্য যে কোনো নাগরিক গবেষণাসহ অন্য কাজগুলো করতে পারবেন।”

তিনি জানান, গবেষণা করে নতুন কিছু আবিস্কার করতে পারলে মেধাস্বত্ত্বের জন্য জাতীয় কমিটির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। কমিটিকে এড়িয়ে কোনো দেশি বা বিদেশি সংস্থার কাছে মেধাস্বত্ত্বের জন্য আবেদন করা যাবে না।

“কমিটির অনুমোদন ছাড়া কারও কাছে নিজের মেধাস্বত্ত্ব বিক্রি বা হস্তান্তরও করা যাবে না।”