‘ব্লগারদের দোষারোপ না করে খুনিদের ধরুন’

বাংলাদেশে ব্লগার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে মুক্তমনাদের রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশি-বিদেশি মানবাধিকারকর্মীরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2015, 01:05 PM
Updated : 19 August 2015, 01:05 PM

ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিস্ট অ্যান্ড এথিকাল ইউনিয়ন এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছে, যে উদ্যোগে বাংলাদেশি ব্লগার ও অধিকার কর্মীদের একটি দলও শরিক হয়েছে।

বুধবার পাঠানো ওই চিঠিতে ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় খুন হওয়ার পর লেখালেখিতে ব্লগারদের সতর্ক থাকার পুলিশ প্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পরামর্শের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে।

চিঠিতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চারটি দাবি জানানো হয়েছে। এগুলো হলো- যেসব ব্লগার-লেখক ও অন্যান্য পেশার ব্যক্তিরা হুমকির মুখে আছেন তাদের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের দোষারোপ বা হয়রানি না করে’ খুনিদের ধরতে নির্দেশ দিতে হবে, দলের মধ্যে যারা নাস্তিক ব্লগারদের ‘মৃত্যুদণ্ডের’ দাবি তুলেছে তাদের রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে হবে এবং ধর্ম নিয়ে বাক স্বাধীনতা সংকোচনকারী আইনের ধারাগুলো বাতিল করতে হবে।

ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিস্ট অ্যান্ড এথিকাল ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু কপসন বলেছেন, “এই ব্লগার, কর্মী ও মানবতাবাদীদের কোনো একজনকে হত্যা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বের মানবতাবাদী ও অধিকার কর্মীদের মর্মাহত করেছে।”

‘খুনিদের ধরতে ব্যর্থ হয়ে কর্তৃপক্ষ উল্টো ক্ষতিগ্রস্তদের দোষারোপ এবং তাদের হয়রানি শুরু করায়’ শোক হতাশায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

চিঠিতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অধিকার কর্মীদের স্বাক্ষরের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকারকে এই স্বীকৃতি দিতে হবে যে, যারা রাজনৈতিক ইসলাম নিয়ে কথা বলবে, যারা মানবিক মূল্যবোধ প্রকাশ করবে, যারা বাংলাদেশে সাংবিধানিক সেক্যুলার গণতন্ত্রের জন্য লড়বে, তাদের সেগুলো করার অধিকার রয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী তাদের বন্ধু রয়েছে, যারা এসব অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা ও এর সুরক্ষা দেখতে চায়।”

চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিস্ট অ্যান্ড এথিকাল ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু কপসন ছাড়া আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির মধ্যে আছেন, প্রোগ্রেসিভ এথিস্টস ইনক. এর প্রেসিডেন্ট এলিস কার, ওয়ান ল ফর অল, ফিতনাহ অ্যান্ড কাউন্সিল অফ এক্সমুসলিম-এর মুখপাত্র মারিয়াম নামাজি, উইমেন অ্যাগেইনস্ট ফান্ডামেন্টালিজম’র প্রতিষ্ঠাতা নীরা উভাল-ডাভিস, গ্লোবাল মাইনোরিটিজ অ্যালায়েন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদ খানসহ আরও অনেকে রয়েছেন।

বাংলাদেশিদের মধ্যে অধ্যাপক অজয় রায়, রাফিদা আহমেদ বন্যা, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক কাবেরী গায়েন, ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন, রুমানা হাশেম, আনসার আহমেদ উল্লাহসহ অনেকে চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।