অসাধারণ বোলিং আর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে ভারতকে আড়াইশর নিচে থামিয়ে ট্রাভিস হেডের দারুণ সেঞ্চুরিতে শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে অস্ট্রেলিয়া।
Published : 19 Nov 2023, 12:35 PM
ভারতে প্রায় দুই মাস ধরে চলা উৎসবের মৌসুম শেষ হওয়ার পথে। তবে তার চেয়েও বড় উৎসবের উপলক্ষ এনে দেওয়ার সুযোগ ক্রিকেট দলের সামনে। এক যুগ পর বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তুলতে পারলে নিশ্চিতভাবেই উদযাপনের বাধ থাকবে না পুরো দেশে।
তাদের উৎসব থামিয়ে অবশ্য আরও একবার শিরোপা উল্লাসে মেতে ওঠার জন্য সমানভাবে প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়াও। ২০১৫ সালে সবশেষ জেতা বিশ্বকাপ ট্রফি পুনরুদ্ধারের অভিযান পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
নিজেদের লক্ষ্য পূরণে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শেষের বাধায় লড়বে ভারত, অস্ট্রেলিয়া। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে খেলা।
টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত অপরাজিত ভারত। দশ ম্যাচের সবকটি বেশ দাপটের সঙ্গেই জিতেছে তারা। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে যাত্রা শুরু করা জিতেছে পরের আট ম্যাচ। তারাও এখন আছে দারুণ ছন্দে।
প্রথম পর্বে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে জয়ী দলের নাম ভারত। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে ১৩ বার মুখোমুখি হয়ে ৮টি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে ১২৫ রানে হারিয়ে নিজেদের তৃতীয় শিরোপা জিতেছিল তারা
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে যাত্রা শুরু করা স্বাগতিকরা টানা দশ ম্যাচ জিতে উঠেছে ফাইনালে। প্রথম ম্যাচ সফল রান তাড়ার পর বাকি পাঁচ ম্যাচ তারা জিতেছে আগে ব্যাট করে।
প্রথম পর্বের সপ্তম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩০২ রানে উড়িয়ে প্রথম দল হিসেবে সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করে ভারত। পরে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তারা নিউ জিল্যান্ডকে হারায় ৭০ রানে।
ঘুরে দাঁড়ানোর দুর্দান্ত গল্প লিখে ফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচে তারা ভারতের কাছে হেরেছে ৭ উইকেটে। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩৪ রানের পরাজয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে নেমে গিয়েছিল তারা।
এরপর আর পেছন ফিরে তাকায়নি প্যাট কামিন্সের দল৷ লিগ পর্বে বাকি সাত ম্যাচের সবকটি জিতে সেমি-ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করে তারা। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে অষ্টমবারের মতো ফাইনালে ওঠে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
দুই দশক পর আবার বিশ্বকাপের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রথমবার মুখোমুখি হয় দুই দল।
রিকি পন্টিংয়ের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে সেদিন আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৫৯ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ২৩৪ রানে থেমে যায় ভারত। অস্ট্রেলিয়া জেতে তাদের তৃতীয় শিরোপা।
ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা অম্ল-মধুর রাহুল দ্রাবিড়ের। তিন বিশ্বকাপ খেলে ২০০৩ সালে শিরোপার খুব কাছে গেলেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেই থামতে হয়েছে তাকে। এবার কোচ হিসেবে একই দলকে হারিয়ে শিরোপা জেতার সুযোগ তার দলের সামনে।
১৯৯৯ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন দ্রাবিড়। সেবার সুপার এইট পর্বে থামে ভারত। পরের বার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন কিপার-ব্যাটসম্যান। বড় পরাজয়ে ধূলিসাৎ হয় শিরোপা স্বপ্ন।
চার বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে দ্রাবিড় ছিলেন ভারতের অধিনায়ক। বাংলাদেশের কাছে হেরে সেবার গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় ১৯৮৩ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। দেশে ফিরে ক্ষুব্ধ দর্শকদের রোষানলে পড়েন দলের ক্রিকেটাররা।
প্রায় দেড় দশকের অপেক্ষার পর খেলোয়াড়ি জীবনের আক্ষেপ এবার কোচ হিসেবে মেটানোর হাতছানি তার সামনে। বিশ্বকাপের একমাত্র অপরাজিত দল দ্রাবিড়ের ভারত। শেষ বাধা উৎরাতে পারলেই বিশ্বকাপজয়ী কোচ হবেন দ্রাবিড়।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে কয়েনভাগ্য গেল প্যাট কামিন্সের পক্ষে। টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।
শুষ্ক উইকেটে জায়গা ধরে রেখে বোলিং করার দিকে মনোযোগ দেওয়ার কথা বলেছেন কামিন্স।
ভারত অধিনায়ক রোহিত শার্মা জানিয়েছেন টস জিতলে তিনি আগে ব্যাটিংই নিতেন। তাই টস হারায় সমস্যা নেই তার।
সেমি-ফাইনাল জেতা একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি দুই দল। ছয় ব্যাটসম্যানের সঙ্গে পাঁচ বোলারের কম্বিনেশনেই নামছে ভারত। অস্ট্রেলিয়া দলে চার বিশেষজ্ঞ বোলারের সঙ্গে আছেন দুই ব্যাটিং অলরাউন্ডার।
ভারত একাদশ: রোহিত শার্মা, শুবমান গিল, ভিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল, সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ শামি, জাসপ্রিত বুমরাহ, কুলদিপ ইয়াদাভ, মোহাম্মদ সিরাজ।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ: ট্রাভিস হেড, ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, মার্নাস লাবুশেন, জশ ইংলিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, অ্যাডাম জ্যাম্পা, জশ হেইজেলউড।
রানের খাতা খোলার আগেই ড্রেসিং রুমে ফিরতে পারতেন শুবমান গিল। অল্পের জন্য ক্যাচ ওঠেনি স্লিপ ফিল্ডারের হাতে।
মিচেল স্টার্কের করা তৃতীয় ওভারের প্রথম বল গিলের ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে। ডানে ঝাঁপিয়ে নাগাল পাননি কিপার জশ ইংলিস। আর অল্পের জন্য সেটি পৌঁছায়নি স্লিপে থাকা মিচেল মার্শ পর্যন্ত।
তিন ওভারে ভারতের সংগ্রহ ১৮ রান। রোহিত শার্মা ১৪ বলে ১৪ ও গিল ৪ বলে ৩ রানে অপরাজিত।
অস্ট্রেলিয়াকে ব্রেক থ্রু এনে দিলেন মিচেল স্টার্ক। ম্যাচের পঞ্চম ওভারে তিনি ফেরালেন শুবমান গিলকে। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিলেন ভারতীয় ওপেনার।
৭ বলে স্রেফ ৪ রান করেছেন গিল। তিন নম্বরে নেমেছেন ভিরাট কোহলি।
গিল ছন্দ না পেলেও ঝড় তুলেছেন আরেক ওপেনার রোহিত শার্মা। স্টার্কের ওই ওভারের শেষ বলে লং অফ দিয়ে তিনি মেরেছেন ছক্কা। আগের ওভারে জশ হেইজেলউডের শেষ দুই বলে ছক্কা ও চার মেরেছেন ভারতীয় অধিনায়ক।
৫ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩৭ রান। ২০ বলে ৩১ রানে খেলছেন রোহিত।
ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ওয়াইড মিড অন দিয়ে ভিরাট কোহলি মারলেন প্রথম বাউন্ডারি। মিচেল স্টার্কের টেনে দেওয়া ডেলিভারি ব্যাকফুট পাঞ্চে পয়েন্ট দিয়ে তিনি মারলেন দ্বিতীয় চার। আবার কিছুটা এগিয়ে কাভার ড্রাইভে চার মেরে দলের পঞ্চাশও পূর্ণ করলেন কোহলি।
রোহিত শার্মার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সঙ্গে কোহলির হ্যাটট্রিক বাউন্ডারিতে সপ্তম ওভারেই পঞ্চাশ পূর্ণ করল ভারত। ৭ ওভারে তাদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫৪ রান।
৩ চার ও ২ ছক্কায় ২২ বলে ৩৩ রানে খেলছেন রোহিত। কোহলি ১৩ বলে ১৬ রানে অপরাজিত।
বিশ্বকাপের এক আসরে অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লেন রোহিত শার্মা। ফাইনালে ২৯তম রান নেওয়ার সময় তিনি টপকে গেলেন কেন উইলিয়ামসনকে।
গত আসরে ৯ ইনিংসে ৫৭৮ রান করেছিলেন উইলিয়ামসন। ফাইনালের নবম ওভার পর্যন্ত চলতি আসরে ১১ ইনিংসে রোহিতের সংগ্রহ ৫৮৭ রান।
এছাড়া অধিনায়কদের এক আসরে ৫০০ রান করা অন্যরা হলেন মাহেলা জয়াবর্ধনে (২০০৭ সালে ৫৪৮), রিকি পন্টিং (২০০৭ সালে ৫৩৯), অ্যারন ফিঞ্চ (২০১৯ সালে ৫০৭)।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের আগের দুই বলে ছক্কা ও চার মারেন রোহিত শার্মা। টানা তৃতীয় বলে বাউন্ডারির খোঁজে নিজের উইকেট দিয়ে এলেন ভারতীয় অধিনায়ক।
খানিক টেনে দেওয়া ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে উড়িয়ে মারেন রোহিত। কিন্তু দূর থেকে খেলায় ব্যাটের নিচের দিকে লেগে বল উঠে যায় আকাশে। কাভার থেকে পেছন দিকে দৌড়ে শেষ মুহূর্তে ডাইভ দিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন ট্র্যাভিস হেড।
৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৩১ বলে ৪৭ রান করেছেন রোহিত। চার নম্বরে নেমেছেন শ্রেয়াস আইয়ার। দ্বিতীয় বলেই বাউন্ডারি মেরেছেন তিনি।
১০ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৮০ রান। ভিরাট কোহলি খেলছেন ২০ বলে ২৩ রানে।
ফাইনালে অল্পেই থামলেন আগের দুই ম্যাচে ঝড়ো সেঞ্চুরি করা শ্রেয়াস আইয়ার। রোহিত শার্মার পরপরই ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন চার নম্বরে নামা ব্যাটসম্যান।
প্যাট কামিন্সের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারি খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন আইয়ার। ৩ বলে তিনি করেছেন ৪ রান।
দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে চাপে ভারত। পাঁচ নম্বরে নেমেছেন লোকেশ রাহুল।
১১ ওভারে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮২ রান। ভিরাট কোহলি ২২ বলে ২৪ রানে অপরাজিত।
দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ার চেষ্টায় ভিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল। রয়েসয়ে খেলে ষোড়শ ওভারে দলের একশ পূর্ণ করলেন দুজন।
১৬ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০১ রান। কোহলি ৩৩ বলে ৩৪ ও রাহুল ২২ বলে ১০ রানে অপরাজিত।
ভারতের দুই ব্যাটসম্যানকে চাপে রেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর দশ ওভারে একটিও বাউন্ডারি মারতে পারেনি স্বাগতিকরা।
দশম ওভারের শেষ বলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে চার মারেন শ্রেয়াস আইয়ার। পরের দশ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে স্রেফ ৩৫ রান করেছে ভারত।
২০ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১১৫ রান। ভিরাট কোহলি ৪২ বলে ৩৯ ও লোকেশ রাহুল ৩৭ বলে ১৯ রানে খেলছেন।
রয়েসয়ে খেলে ধীরে ধীরে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন ভিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। দুজনের জুটিতে এরই মধ্যে এসেছে পঞ্চাশ রান। ফিফটি পূর্ণ করেছেন কোহলি নিজেও।
অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে জুটির পঞ্চাশ করতে লেগেছে ৮৮ বল। কোনো বাউন্ডারি হয়নি এই জুটিতে।
চলতি বিশ্বকাপে নবম পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে ৫৬ বলে মাইলফলক স্পর্শ করেছেন কোহলি। তিনি মেরেছেন চারটি বাউন্ডারি। সবগুলোই প্রথম দশ ওভারের ভেতরে।
২৬ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৩৫ রান। কোহলি ৫৭ বলে ৫৯, রাহুল ৫৮ বলে ২৮ রানে খেলছেন।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে বাউন্ডারির দেখা পেল ভারত। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে প্যাডেল স্কুপ করে ৯৭ বল পর ভারতের প্রথম বাউন্ডারি মারলেন লোকেশ রাহুল।
এর আগে দশম ওভারের শেষ বলে ম্যাক্সওয়েলকেই সবশেষ চার মারেন শ্রেয়াস আইয়ার।
চলতি বিশ্বকাপে দুই বাউন্ডারির মাঝে এটি দ্বিতীয় লম্বা বিরতি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা ১২৮ বল কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি নেদারল্যান্ডস।
২৭ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৪২ রান। রাহুল ৬৩ বলে ৩৪ ও ভিরাট কোহলি ৫৮ বলে ৫১ রানে খেলছেন।
দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে ফিরেই ভিরাট কোহলিকে আউট করলেন প্যাট কামিন্স। শর্ট লেংথ ডেলিভারি থার্ড ম্যানের দিকে খেলার চেষ্টা করেন কোহলি। ব্যাটের নিচের দিকে লেগে বল আঘাত করে স্ট্যাম্পে।
৪ চারে ৬৩ বলে ৫৪ রান করেছেন কোহলি। চলতি আসরে ১১ ইনিংসে ৩ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটিতে তার সংগ্রহ ৭৬৫ রান। বিশ্বকাপের এক আসরে আর কোনো ব্যাটসম্যানের ৭০০ রান নেই।
কোহলির বিদায়ে ভেঙেছে ৬৭ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। সুরিয়াকুমার ইয়াদাভের আগে ছয় নম্বরে নেমেছেন রবীন্দ্র জাদেজা। লোকেশ রাহুল খেলছেন ৬৭ বলে ৩৭ রানে।
২৯ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৪৯ রান।
দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ পূর্ণ করলেন লোকেশ রাহুল। স্রেফ এক চারে এই মাইলফলক ছুঁতে তিনি খেললেন ৮৬ বল।
বিশ্বকাপ ফাইনালে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে দ্বিতীয় ভারতীয় ও সব মিলিয়ে পঞ্চম কিপার-ব্যাটসম্যান রাহুল।
৩৫ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৭৩ রান। রবীন্দ্র জাদেজা খেলছেন ২০ বলে ৯ রানে।
প্যাট কামিন্সের পর এবার আক্রমণে ফিরেই উইকেট নিলেন জশ হেইজেলউড। ড্রেসিং রুমে ফেরত পাঠালেন রবীন্দ্র জাদেজাকে।
৩৬তম ওভারের চতুর্থ বলে জাদেজার বিপক্ষে কট বিহাইন্ডের ব্যর্থ রিভিউ নেয় অস্ট্রেলিয়া। পরের বলে কিপারের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েই ফেরেন জাদেজা।
২২ বলে ৯ রান করেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সাত নম্বরে নেমেছেন সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ। লোকেশ রাহুল খেলছেন ৮৯ বলে ৫৫ রানে।
৩৬ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৭৮ রান।
অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে ভারতের ইনিংস। ৪১তম ওভারে পূর্ণ হয়েছে তাদের দুইশ রান।
ষোড়শ ওভারে একশ ছোঁয়ার পর আরও একশ রান নিতে তাদের লেগেছে ২৫ ওভার।
৪১ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২০০ রান। লোকেশ রাহুল ১০৬ বলে ৬৬, সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ ১৪ বলে ৯ রানে খেলছেন।
উইকেটে লম্বা সময় কাটালেও মন্থর ব্যাটিংয়ে ইনিংস বেশি বড় করতে পারলেন না লোকেশ রাহুল। মিচেল স্টার্কের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে তিনি ফিরলেন ১০৭ বলে ৬৬ রান করে।
৪২তম ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিটি রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ব্যাক অব লেংথে করেন স্টার্ক। পিচ করার পর লাইন ধরে রেখে সোজা যাওয়া ডেলিভারি কিপারের গ্লাভসে পৌঁছানোর আগে ছুঁয়ে যায় রাহুলের ব্যাটের বাইরের কানায়।
রাহুলের বিদায়ে আড়াইশর আগেই থেমে যাওয়ার শঙ্কায় ভারত। আট নম্বরে নেমেছেন মোহাম্মদ শামি। সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ খেলছেন ১৬ বলে ১০ রানে।
৪২ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২০৭ রান।
পাঁচ নম্বরে নেমে ১০৭ বলের ইনিংসে ৬৬ রান করে আউট হয়েছেন লোকেশ রাহুল। স্রেফ ১টি চার মেরেছেন তিনি।
বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে কম বাউন্ডারির ফিফটি এটি। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে আগের ৩৩টি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে অন্তত ২টি বাউন্ডারি মেরেছেন প্রত্যেক ব্যাটসম্যান।
১৯৮৭ আসরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০৩ বলে ৫৮ রানের ইনিংসে ২টি চার মেরেছিলেন ইংল্যান্ডের বিল অ্যাথলি।
বড় শট খেলতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে এলেন মোহাম্মদ শামি। মিচেল স্টার্কের বলে দূর থেকেই স্লগ করার চেষ্টায় কট বিহাইন্ড হলেন নিচের সারির এই ব্যাটসম্যান।
১ চারে ১০ বলে ৬ রান করেছেন শামি। সুরিয়াকুমার ইয়াদাভের সঙ্গে জুটি বাধতে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমেছেন জাসপ্রিত বুমরাহ।
৪৪ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২১৩ রান। ২০ বলে ১৩ রানে অপরাজিত সুরিয়াকুমার।
জাসপ্রিত বুমরাহকে ফিরিয়ে চলতি আসরে নিজের ২৩তম উইকেট নিলেন অ্যাডাম জ্যাম্পা। একইসঙ্গে ছুঁলেন শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরনকে।
এত দিন বিশ্বকাপের এক আসরে স্পিনারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড ছিল মুরালিধরনের। ২০০৭ বিশ্বকাপে ১০ ইনিংসে ২৩ উইকেট নেন তিনি। ১৬ বছর পর তার পাশে বসলেন জ্যাম্পা।
সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের এক আসরে এর চেয়ে বেশি উইকেট আছে শুধু দুজনের। অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার মিচেল স্টার্ক (২০১৯ সালে ২৭) ও গ্লেন ম্যাকগ্রা (২০০৭ সালে ২৬)।
কিছুই করতে পারলেন না সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ। জশ হেইজেলউডের স্লোয়ার বাউন্সারে পুল খেলার চেষ্টায় আগেই ব্যাট চালান সুরিয়াকুমার। বল তার গ্লাভসে লেগে উঠে যায় আকাশে। উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ ক্যাচ নেন জশ ইংলিস।
১ চারে ২৮ বলে ১৮ রান করে ফিরেছেন সুরিয়াকুমার। উইকেটে এখন ভারতের শেষ জুটি মোহাম্মদ সিরাজ ও কুলদিপ ইয়াদাভ।
৪৭.৪ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২২৭ রান।
শ্রেয়াস আইয়ারের ক্যাচ নিয়ে শুরু। এরপর একে একে রবীন্দ্র জাদেজা, লোকেশ রাহুল, মোহাম্মদ শামি ও সুরিয়াকুমার ইয়াদাভের ক্যাচও নিরাপদে গ্লাভসে নিলেন জশ ইংলিস। গড়লেন দারুণ এক রেকর্ড।
বিশ্বকাপ ফাইনালে পাঁচ ক্যাচ নেওয়া প্রথম ক্রিকেটার তিনি। আগের ১২ আসরের ফাইনালে সর্বোচ্চ ৩টি করে নেওয়া কীর্তি রয়েছে রডনি মার্শ (১৯৭৫), মইন খান (১৯৯৯) ও টম ল্যাথামের (২০১৯)।
ইনিংসের শেষ বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হলেন কুলদিপ ইয়াদাভ। ভারত অল আউট হলো ২৪০ রানে। ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের জন্য তুলনামূলক ছোট লক্ষ্য পেল অস্ট্রেলিয়া।
বিশ্বকাপ ফাইনালে এর চেয়ে কম রান করে জেতার ঘটনা আছে স্রেফ একটি। ১৯৮৩ সালে ১৮৩ রান করে ৪৩ রানে জিতে নিজেদের প্রথম শিরোপা জিতেছিল ভারত। ৪০ বছর পর আবার তেমন কিছুই করতে হবে রোহিত শার্মার দলকে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রোহিত। ৪ চার ও ৩ ছক্কায় স্রেফ ৩১ বলে ৪৭ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক। পাওয়ার প্লেতে ভারত পায় ৮০ রান।
এরপর অস্ট্রেলিয়ার সুশৃঙ্খল বোলিংয়ে আর গতি পায়নি ভারতের ইনিংস। পরের ৪০ ওভারে তারা করতে পেরেছে মোটে ১৬০ রান। রোহিত ছাড়া আর কেউ ছক্কা মারতে পারেননি। পুরো ইনিংসে চার হয়েছে ১৩টি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেছেন লোকেশ রাহুল। ১০৭ বলের ইনিংসে তার বাউন্ডারি স্রেফ একটি। ভিরাট কোহলি ৪ চারে খেলেছেন ৬৩ বলে ৫৪ রানের ইনিংস।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক। অন্য দুই পেসার জশ হেইজেলউড ও প্যাট কামিন্স ধরেছেন ২টি করে শিকার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ২৪০ (রোহিত ৪৭, গিল ৪, কোহলি ৫৪, শ্রেয়াস ৪, রাহুল ৬৬, জাদেজা ৯, সুরিয়াকুমার ১৮, শামি ৬, বুমরাহ ১, কুলদিপ ১০, সিরাজ ৯*; স্টার্ক ১০-০-৫৫-৩, হেইজেলউড ১০-০-৬০-২, ম্যাক্সওয়েল ৬-০-৩৫-১, কামিন্স ১০-০-৩৪-২, জ্যাম্পা ১০-০-৪৪-১, মার্শ ২-০-৫-০, হেড ২-০-৪-০)
অস্ট্রেলিয়ার পথ চলা শুরু হয় চার দিয়ে। জাসপ্রিত বুমরাহর বল ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে দুই স্লিপ ফিল্ডারের মাঝ দিয়ে যায় বাউন্ডারিতে, ক্যাচের চেষ্টাই করেননি ভিরাট কোহলি কিংবা শুবমান গিল। সেই ওভার থেকে তিন বাউন্ডারিতে আসে ১৫ রান।
মোহাম্মদ সিরাজের জায়গায় নতুন বল হাতে পাওয়া মোহাম্মদ শামি নিজের প্রথম বৈধ বলেই আঘাত হানেন। ছন্দে থাকা পেসারের প্রথম বল ছিল ওয়াইড, পরের বলেই দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন ওয়ার্নার।
অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল খেলার কোনো দরকারই ছিল না। তবুও ব্যাট চালিয়ে দেন ওয়ার্নার। ঠিক মতো খেলতে পারেননি, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে দ্রুত গতিতে ক্যাচ যায় স্লিপে। সেখানে কোনো ভুল করেননি কোহলি।
৩ বলে ১ চারে ৭ রান করে ফেরেন ওয়ার্নার।
২ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ১ উইকেটে ২৮। ক্রিজে ট্রাভিস হেডের সঙ্গী মিচেল মার্শ।
মোহাম্মদ শামিকে চার ও ছক্কা হাকানো মিচেল মার্শকে বেশিক্ষণ টিকতে দিলেন না জাসপ্রিত বুমরাহ। দারুণ এক ডেলিভারিতে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে কট বিহাইন্ড করে দিলেন তিনি।
অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বল অনেকটা জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলার চেষ্টায় সফল হননি মার্শ। বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে লোকেশ রাহুলের গ্লাভসে।
একটি করে ছক্কা ও চারে ১৫ বলে ১৫ রান করেন মার্শ।
৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেটে ৪১। ক্রিজে ট্রাভিস হেডের সঙ্গী স্টিভেন স্মিথ।
মিচেল মার্শের পর এবার স্টিভেন স্মিথকেও ফেরালেন জাসপ্রিত বুমরাহ। পঞ্চাশের আগে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে অস্ট্রেলিয়া।
সপ্তম ওভারের শেষ বলে অফ কাটার ধরনের ডেলিভারি করেন বুমরাহ। জোড়া পায়ে খেলার চেষ্টায় ব্যর্থ হন স্মিথ। বল প্যাডে আঘাত করতেই আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।
ট্রাভিস হেডের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন স্মিথ। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, ওই বলের ইমপ্যাক্ট ছিল অফ স্ট্যাম্পের বাইরে। অর্থাৎ রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন স্মিথ।
১ চারে ৯ বলে ৫ রান করেছেন স্মিথ। পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমেছেন মার্নাস লাবুশেন।
৭ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৪৭ রান। হেড খেলছেন ১৫ বলে ১০ রানে।
প্রথম দশ ওভারে ৩ উইকেট হারালেও রানের গতি ধরে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। পাওয়ার প্লেতে তারা করেছে ৬০ রান। বাকি ৪০ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখে তাদের প্রয়োজন আরও ১৮১ রান।
জাসপ্রিত বুমরাহর প্রথম ওভারে ১৫ রান নিয়ে শুরু অস্ট্রেলিয়ার যাত্রা। মোহাম্মদ শামির পরের ওভারে ডেভিড ওয়ার্নার আউট হলেও স্কোর বোর্ডে যোগ হয় আরও ১৩ রান।
পরের ৮ ওভারে লাগাম টেনে ধরে ভারত। আরও ২ উইকেট নিয়ে স্রেফ ৩২ রান দিয়েছেন দুই পেসার। ওয়ার্নারের পর আউট হয়েছেন মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ।
ট্র্যাভিস হেড ২৬ বলে ১৯ রানে খেলছেন। মার্নাস লাবুশেন ৭ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি।
পাওয়ার প্লের ভেতরে ৩ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েছেন ট্র্যাভিস হেড, মার্নাস লাবুশেন। দুজন এরই মধ্যে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি। একশ পূর্ণ হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার।
জুটির পঞ্চাশ ছুঁতে ৭০ বল লেগেছে হেড, লাবুশেনের। যেখানে হেডের অবদান ৩২, লাবুশেন করেছেন ১২। অতিরিক্ত এসেছে ৬ রান।
১৯.১ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০০ রান।
অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার ভিড়ে এক প্রান্তে নির্ভরতা দিয়ে ফিফটি করলেন ট্র্যাভিস হেড। চলতি বিশ্বকাপে এটি তার তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস।
৬ চার ও ১ ছক্কায় ৫৮ বলে মাইলফলক স্পর্শ করেছেন হেড। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে তিনি খেলেছেন ৬২ রানের ইনিংস।
২২ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১১৭ রান। বাকি ২৮ ওভারে তাদের প্রয়োজন ১২৪ রান।
ধীরে ধীরে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিচ্ছেন ট্র্যাভিস হেড, মার্নাস লাবুশেন। এরই মধ্যে দুজন মিলে পূর্ণ করেছেন জুটির একশ রান। জয়ের জন্য রানের চাহিদা নেমে এসেছে একশ রানের নিচে।
২৭ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৪৮ রান। বাকি ২৩ ওভারে তাদের প্রয়োজন আর ৯৩ রান।
হেড ৭৪ বলে ৭১ ও লাবুশেন ৬১ বলে ৩৪ রানে খেলছেন।
জাসপ্রিত বুমরাহর ইয়র্কারে পরাস্ত হলেন মার্নাস লাবুশেন। বল আঘাত করল প্যাডে। জোরাল আবেদনে সাড়া দিলেন না আম্পায়ার। বুমরাহর আত্মবিশ্বাসে ভরসা রেখে রিভিউ নিতে একদম সময় নেননি রোহিত শার্মা।
টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বলের পিচিং ও ইমপ্যাক্ট লাইনেই ছিল। তবে উইকেট 'আম্পায়ার্স কল' থাকায় বহাল থাকে মূল সিদ্ধান্ত। ফলে বিপদ ঘটেনি লাবুশেনের।
২৮ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেট ১৬২ রান। ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জিততে ২২ ওভারে তাদের প্রয়োজন আর ৭৯ রান।
ট্র্যাভিস হেড ৭৯ বলে ৮৪ ও লাবুশেন ৬২ বলে ৩৪ রানে খেলছেন।
কুলদিপ ইয়াদাভের স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি ব্যাকফুটে আলতো করে কাভারের দিকে ঠেলেই দ্রুত রানের জন্য ছুটলেন ট্রাভিস হেড। অপর প্রান্তে পৌঁছেই ব্যাট উঁচিয়ে শুরু করলেন সেঞ্চুরির উদযাপন।
শুরু থেকে দারুণ ব্যাটিংয়ে স্রেফ ৯৫ বলে তিন অঙ্ক ছুঁলেন হেড। ১৪ চার ও ১ ছক্কায় এই মাইলফলকে পা রাখেন বাঁহাতি ওপেনার। চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ও ওয়ানডেতে তার পঞ্চম সেঞ্চুরি এটি।
৩৪ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৮৫ রান। জয়ের জন্য ৯৬ বলে আর ৫৬ রান প্রয়োজন তাদের।
মার্নাস লাবুশেন ৮২ বলে ৪১ রানে খেলছেন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে এরই মধ্যে এসেছে ১৩৮ রান।
বিশ্বকাপের গত দুই আসরে ফাইনালে দেখা মেলেনি কোনো সেঞ্চুরির। এবার সেই অপেক্ষা ঘোচালেন ট্রাভিস হেড। বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় ওপেনার, তৃতীয় অস্ট্রেলিয়া ও সব মিলিয়ে সপ্তম ব্যাটসম্যান তিনি।
২০০৭ বিশ্বকাপে ওপেনিংয়ে নেমে ১৪৯ রানের ইনিংস খেলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। বিশ্বকাপ ফাইনালে এটিই সর্বোচ্চ ইনিংস। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তিন অঙ্কের ইনিংস খেলা অন্য অস্ট্রেলিয়ান রিকি পন্টিং, ২০০৩ সালে ভারতের বিপক্ষে অপরাজিত ১৪০ রান।
এছাড়া বৈশ্বিক এই আসরের ফাইনালে সেঞ্চুরি করা অন্যরা হলেন ক্লাইভ লয়েড (১৯৭৫ সালে ১০২), ভিভ রিচার্ডস (১৯৭৯ সালে ১৩৮*), অরভিন্দ ডি সিলভা (১৯৯৬ সালে ১০৭*), মাহেলা জয়াবর্ধনে (২০১১ সালে ১০৩*)।
মোহাম্মদ সিরাজের বাউন্সার পুল করে ছক্কা মারলেন ট্রাভিস হেড। অস্ট্রেলিয়া পৌঁছে গেল দুইশ রানে। মার্নাস লাবুশেনের সঙ্গে তার জুটিতে পূর্ণ হলো দেড়শ রান।
৩৭ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২০৪ রান। জয়ের জন্য আর ৩৭ রান প্রয়োজন তাদের।
হেড ও লাবুশেনের জুটিতে এরই মধ্যে এসেছে ১৫৭ রান। বিশ্বকাপ ফাইনালে তৃতীয় দেড়শ ছোঁয়া জুটি এটি। আগের দুটিও অস্ট্রেলিয়ার।
অন্য প্রান্তে ট্রাভিস হেডের স্ট্রোকসমৃদ্ধ ব্যাটিংয়ের স্রোতে ভেসে না গিয়ে এক প্রান্ত আগলে রেখে খেললেন মার্নাস লাবুশেন। দলকে জয়ের কাছে নিয়ে রয়েসয়ে ব্যাটিংয়ে করলেন ফিফটি।
৩ চারে পঞ্চাশ ছুঁতে ৯৯ বল খেলেছেন লাবুশেন।
হেডের সঙ্গে তার জুটিতে এরই মধ্যে এসেছে ১৭৮ রান। বিশ্বকাপ ফাইনালে এর চেয়ে বড় জুটি আছে আর একটি। ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে রিকি পন্টিং, ড্যামিয়েন মার্টিনের অবিচ্ছিন্ন ২৩৪ রান।
৪০ ওভারে সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২২৫ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন আর ১৬ রান। হেড খেলছেন ১১৪ বলে ১২৮ রানে।
জয়ের জন্য প্রয়োজন ২ রান। মোহাম্মদ সিরাজের শর্ট লেংথ ডেলিভারি ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিলেন ট্রাভিস হেড। মাঠে থেকে দলকে জেতানো হলো না সেঞ্চুরি করা বাঁহাতি ওপেনারের।
১৫ চার ও ৪ ছক্কায় ১২০ বলে ১৩৭ রান করেছেন হেড। তার বিদায়ে ভেঙেছে মার্নাস লাবুশেনের সঙ্গে ১৯২ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।
বিশ্বকাপ ফাইনালে এর চেয়ে বড় জুটি আছে আর একটি। ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে রিকি পন্টিং, ড্যামিয়েন মার্টিনের অবিচ্ছিন্ন ২৩৪ রান।
মোহাম্মদ সিরাজের বাউন্সার পুল করলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ডিপ স্কয়ার লেগে ডাইভ দিয়ে চার ঠেকালেন কুলদিপ ইয়াদাভ। তবে বল কুড়িয়ে ফেরত পাঠানোর আগেই দুই রান নিয়ে নিলেন ম্যাক্সওয়েল, মার্নাস লাবুশেন। নিশ্চিত করলেন অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়।
আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেছিলেন, ১ লাখ ৩০ হাজার দর্শকের স্টেডিয়ামকে নীরবতায় ডোবানোর মতো তৃপ্তিদায়ক কিছু নেই খেলাধুলায়। পর দিন মাঠে সেটিই করল তার দল।
অস্ট্রেলিয়ার জিততে ৫০ রান বাকি থাকা অবস্থা থেকেই হতাশায় নিমজ্জিত হয় আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। একেকটি রানের সঙ্গে যেন নীরবতা বাড়তে থাকে আরও।
শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে জিতে নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপা নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। ২৪১ রানের লক্ষ্যে ট্রাভিস হেডের ১৩৭ ও লাবুশেনের অপরাজিত ৫৮ রানের সৌজন্যে ৪২ বল বাকি থাকতেই ফাইনাল জিতে নিয়েছে তারা।
অ্যালান বোর্ডার, স্টিভ ওয়াহ, রিকি পন্টিং, মাইকেল ক্লার্কের পর অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কদের তালিকায় নাম তুললেন প্যাট কামিন্স। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ জেতা একাদশ অধিনায়ক তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ২৪০ (রোহিত ৪৭, গিল ৪, কোহলি ৫৪, শ্রেয়াস ৪, রাহুল ৬৬, জাদেজা ৯, সুরিয়াকুমার ১৮, শামি ৬, বুমরাহ ১, কুলদিপ ১০, সিরাজ ৯*; স্টার্ক ১০-০-৫৫-৩, হেইজেলউড ১০-০-৬০-২, ম্যাক্সওয়েল ৬-০-৩৫-১, কামিন্স ১০-০-৩৪-২, জ্যাম্পা ১০-০-৪৪-১, মার্শ ২-০-৫-০, হেড ২-০-৪-০)
অস্ট্রেলিয়া: ৪৩ ওভারে ২৪১/৪ (ওয়ার্নার ৭, হেড ১৩৭, মার্শ ১৫, স্মিথ ৪, লাবুশেন ৫৮*, ম্যাক্সওয়েল ২*; বুমরাহ ৯-২-৪৩-২, শামি ৭-১-৪৭-১, জাদেজা ১০-০-৪৩-০, কুলদিপ ১০-০-৫৬-০, সিরাজ ৭-০-৪৫-১)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী
এক আসর পর আবারও বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তুলল অস্ট্রেলিয়া। ঘরের মাঠে ২০১৫ সালে ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে পঞ্চম শিরোপা জিতেছিল তারা। এবার ভারতকে তাদের মাটিতে হারিয়ে জিতল ছয় নম্বরটি।
১৯৮৭ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। পরের শিরোপার জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয় এক যুগ। ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপ জিতে হ্যাটট্রিক করে তারা।
ফাইনালে ভারতের দ্বিতীয় পরাজয় এটি। বিশ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তারা হেরেছিল ১২৫ রানে।
ছয় শিরোপার দুটি ভারতের মাটিতে জিতল অস্ট্রেলিয়া। একটি দেশের মাটিতে, বাকি তিনটি ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে।
সেমি-ফাইনালের পর ফাইনালেও অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক ট্রাভিস হেড। ১৫ চার ও ৪ ছক্কায় ১২০ বলে ১৩৭ রানের ইনিংসের পর এই পুরস্কারে বাঁহাতি ওপেনারের আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীও অবশ্য ছিল না।
চলতি বিশ্বকাপে হেডের তৃতীয় ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি এটি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেমির আগে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে এই পুরস্কার জেতেন তিনি।
অথচ চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় বিশ্বকাপের প্রথম পাঁচ ম্যাচ খেলতে পারেননি হেড। তবু তাকে স্কোয়াডে ধরে রাখে অস্ট্রেলিয়া। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু হয় তার। দারুণ সেঞ্চুরিতে উপলক্ষ রাঙান বাঁহাতি ওপেনার।
পরের তিন ম্যাচে বড় হয়নি হেডের ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেরা চারের লড়াইয়ে বল হাতে ২ উইকেটের পর ব্যাটিংয়ে খেলেন ৪৮ বলে ৬২ রানের ইনিংস। সেদিনও তিনি পান ম্যাচ সেরার পুরস্কার।